নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাড়িতে যখন তখন কলকাতা পুলিস হানা দিতে পারে। এই ভয় থেকেই বাসন্তীতে কাকার মাটির বাড়ির দেওয়ালে গর্ত খুঁড়ে লুকিয়ে রেখেছিল ৭২টি সোনার হার! যার ওজন প্রায় এক কেজি। দাম আনুমানিক ৭২ লক্ষ টাকা। কিন্তু এত কিছু করেও শেষরক্ষা হল না।
রবিবার রাত ৮টা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে হানা দিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে মুচিপাড়া থানার পুলিস। ধৃতের নাম আলমগীর সরকার (৩৮)। তাকে সঙ্গে নিয়েই কাকার বাড়িতে হানা দেয় পুলিসর ওই টিম। সেখানে তল্লাশির সময় মাটির ঘরের দরজার ঠিক উপরেই খোঁজ মেলে একটি গর্তের। তারমধ্যেই একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া অবস্থা ছিল সোনার হারগুলি। কেউ ঘরে ঢুকলে যাতে এই চোরাই সোনা দেখতে না পান, সেকারণেই ওই কুঠুরিতে লুকিয়ে রেখেছিল আলমগীর।
কলকাতা পুলিসের এক সূত্র জানাচ্ছে, গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে বউবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ঋষিকান্ত গাইকোয়াড় সোনাপট্টির কারিগর আলমগীরকে প্রায় এক কেজি ওজনের ৭২টি সোনার হার পালিসের জন্য দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তারপর ওই হার নিয়ে উধাও হয়ে যায় আলমগীর। গত ২৪ জুন মুচিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ঋষিকান্ত গাইকোয়াড়। যার ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্তে নামে মুচিপাড়া থানা।
ধৃত আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জানতে পেরেছে, এই বিপুল সোনার গয়না চুরি করে প্রথমে সে ওড়িশায় পালিয়ে যায়। সেকারণেই তার নাগাল পাচ্ছিল না পুলিস। এদিকে, বউবাজারের সোনাপট্টির পরিস্থিতি কিছুটা থিতিয়ে যেতেই ওড়িশা থেকে চুপিসারে বাসন্তীতে নিজের গ্রামে ফিরে আসে আলমগীর। তবে তক্কে তক্কে ছিল মুচিপাড়া থানা।
রবিবার রাতে সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে হানা দেয় মুচিপাড়া থানার একটি টিম। প্রথমে আলমগীরকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস তার কাকার বাড়িতে দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়ে দেওয়ালের গর্ত থেকে ৬২টি সোনার হার উদ্ধার করে। বাকি দশটি হারের হদিশ মেলেনি সেখানে। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় বছর আটত্রিশের আলমগীরকে। ধৃতকে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বাকি হারগুলি উদ্ধারের জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।