ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস জয় করে দেশে ফিরলেন বাংলার শুভম
বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে দেশের পতাকা উড়িয়ে ফিরলেন এক হুগলিবাসী। ন’দিনের কঠিন সফরের শেষে এখন মুখে চওড়া হাসি উত্তরপাড়ার হিন্দমোটরের শুভম চট্টোপাধ্যায়ের। শুধু শৃঙ্গজয়ের সাফল্যই নয়, তিনি সঙ্গে করে এনেছেন পাহাড়ের ‘প্রত্যাঘাত’ও। সুদর্শন যুবকের দু’গালেই তৈরি হয়েছে বিরাট ক্ষতচিহ্ন, যা প্রমাণ করে দিচ্ছে কতটা কঠিন ছিল রাশিয়ার মাউন্ট এলব্রুস শৃঙ্গে পা রাখা। পর্বতারোহণে ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দেওয়া পিয়ালি বসাকের জেলার যুবকের আরও একটি কৃতিত্ব অবশ্যই আছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোর শিখরে পা রেখেছিলেন।
যদিও শুভমের দাবি, প্রথম ভারতীয় এবং বাঙালি হিসেবে তাঁর কৃতিত্ব হল এলব্রুসের উত্তর অংশ দিয়ে পাহাড়ে উঠে পশ্চিম শিখর জয় করে আবার উত্তর দিক দিয়েই নেমে আসা। তিনি বলেন, এলব্রুসের দু’টি শৃঙ্গ আছে। একটি ৫৬৪২ মিটার ও অন্যটি ৫৬২০ মিটার। পাশাপাশি, উত্তর দিক দিয়ে এলব্রুসে উঠে নেমে আসা খুবই কঠিন কাজ। সেই কঠিন পথে গিয়ে ৫৬৪২ মিটার শৃঙ্গে উঠে আবার কঠিন পথে নেমে আসি। আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ে দেশবন্ধুনগরের বছর আঠাশের শুভমের মা প্রাক্তন সরকারি কর্মী কৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ছেলেকে পাহাড় ডাকে আর এদিকে মায়ের বুক কাঁপে। বুকের মাঝে হাতুড়ির ঘা পড়লেও পাহাড়ের পথে পা বাড়ানো ছেলের দিকে হাসিমুখে চেয়ে থাকতে হয়। পাছে ছেলের আত্মবিশ্বাস টলে যায়!’
আক্ষরিক অর্থেই ছা-পোষা পরিবারের ছেলে শুভম। বাবা চন্দন চট্টোপাধ্যায় ব্যবসায়ী। বাড়ির ছোট ছেলে বছর পঁচিশেই বাবার ব্যবসায় হাত ও মাথা দু’টিই পাকিয়ে ফেলেছিলেন। তারপরে কোনও এক খেয়ালে পাহাড় চড়ার নেশা পেয়ে বসে তাঁকে। ব্যস, তারপরেই অরুণাচল যাত্রা। সেখানেই শুভম নিয়েছেন পাহাড় চড়ার ট্রেনিং। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম প্রয়াসেই ছুঁয়ে ফেলেন কিলিমাঞ্জারোর শিখর। আত্মবিশ্বাসের পারদ চড়ে যায় অনেকটাই। কয়েক মাসের প্রস্তুতি আর টাকাপয়সা গুছিয়ে নিয়ে জুলাইয়ে পাড়ি দেন এলব্রুস অভিমুখে। রবিবার দুপুরেই ফিরেছেন উত্তরপাড়ার বাড়িতে। তাৎপর্যপূর্ণ এই যে, সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে নতুন শৈলশিখরে জয়ের প্রস্তুতি। দুই শৃঙ্গ জয়ের সাফল্যে মজে যেতে নারাজ দুর্দম বাঙালি সন্তান।