• তহবিল ফাঁকা, নিকাশির কাজে ‘ভরসা’ এলাকাবাসীর অনুদানই
    বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: নিজস্ব তহবিলের ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ দশা। অগত্যা বর্ষার মুখে নিকাশির কাজ করতে এলাকাবাসীর আর্থিক সাহায্যই ‘ভরসা’ সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির। এই পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত আন্দুল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন অংশে নিকাশিনালা সাফাইয়ের জন্য আর্থিক অনুদান নেওয়া হচ্ছে গ্রামবাসীদের থেকেই। তবে পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারীরা মানছেন, নিজস্ব তহবিল বাড়ানোর জন্য বিকল্প পথ খুঁজতেই হবে। 


    আন্দুল পঞ্চায়েতের আড়গোড়ি, মোল্লাপাড়া, জঙ্গলপুর, ফকিরপাড়া সহ বেশ কিছু এলাকার নিকাশি নিয়ে ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। কোথাও কোথাও বছরের আট-ন’মাস জমা জলের দুর্ভোগ সহ্য করতে হয় মানুষকে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে প্রচুর অর্থ প্রয়োজন। খাতায়-কলমে পঞ্চায়েত এলাকা হলেও গোটা আন্দুল কার্যত শহরে পরিণত হয়েছে। অলিগলিতে মাথা তুলছে বহুতল। গত ২০ বছরে জনসংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে পঞ্চায়েত স্তরের সীমিত আর্থিক সামর্থ্যে নিকাশি ব্যবস্থার আমূল বদল কার্যত অসম্ভব। তাছাড়া, অনেক জায়গায় নিকাশি পরিকাঠামো বলতেই কিছু নেই। কিন্তু রীতিমতো ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল। ইতিপূর্বে এই সমস্যা নিয়ে আন্দুল পঞ্চায়েতের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এলাকাবাসী। চলতি বর্ষায় এই সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার পথ খুঁজছিল সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতি। সেখানেই অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় নিজস্ব তহবিলের রুগ্ন দশা। এই কারণে কাজ শুরু করা যায়নি সঠিক সময়ে। এই অবস্থায় কয়েকটি এলাকার সাধারণ মানুষই আর্থিক সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। অন্য উপায় না পেয়ে সেই অর্থেই এখন আন্দুলের বিভিন্ন অংশে জোরকদমে চলছে নিকাশি সাফাইয়ের কাজ। 


    পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে খবর, সমস্যাপ্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করে গত ১৮ দিন ধরে জেসিবি নামিয়ে নিকাশিনালা সাফাইয়ের কাজ চলছে। যেসব এলাকায় জেসিবি ব্যবহার করা যায়নি, সেখানে প্রতিদিন ২০ জন শ্রমিককে কাজে নামানো হচ্ছে নালা থেকে পলি তোলার জন্য। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অরূপেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাম আমলে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা কারখানাগুলির কারণে আন্দুল পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় আজও জমা জলের সমস্যা প্রকট। পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব তহবিলে যে টাকা রয়েছে, বেতন দিতেই তা খরচ হয়ে যায়। স্থানীয় কিছু ব্যক্তি সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন। সেই আর্থিক সহায়তায় নিকাশিনালাগুলি জরুরি ভিত্তিতে সাফাই করা হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা সমিতির আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।’ আড়গোরি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘পঞ্চায়েত পরিকাঠামোর সীমাবদ্ধতার বিষয়টি আমরা বুঝি। তাই আমাদের এলাকার নিকাশিনালা সাফাইয়ের জন্য সামর্থ্য মতো সাহায্য তুলে দিয়েছি।’ বিষয়টি নিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নন্দলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বাম আমলে জাতীয় সড়কের ধারে নয়ানজুলিগুলি চওড়া ছিল। পরবর্তীকালে সড়ক সম্প্রসারণের কারণে সেগুলি সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ে। প্রয়োজন ছিল পরিকল্পনামাফিক নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলা। কিন্তু তৃণমূল সরকারের পরিকল্পনার অভাবে আজ এই অবস্থা।’
  • Link to this news (বর্তমান)