• অভিযানে আক্রান্ত পুলিশ, সুড়ঙ্গ দিয়ে পালাল প্রতারক
    এই সময় | ১৬ জুলাই ২০২৪
  • এই সময়, কুলতলি: নকল মূর্তি ও নকল সোনা দেখিয়ে মানুষকে ঠকিয়ে টাকা হাতানোর কারবার চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। একাধিকবার পুলিশে অভিযোগও হয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে কুলতলির জালাবেড়িয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পয়তারহাটের সাদ্দাম সর্দার এই কাজে জড়িত। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার সকালে সাদ্দামের বাড়িতে অভিযান চালাতে গেলে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়।বিকেলে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ এক সুড়ঙ্গের খোঁজ পায়। যা দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন পোড় খাওয়া তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে গ্রেপ্তার করা হয় সাদ্দামকে। কিন্তু থানায় নিয়ে আসার সময় বাড়ির মহিলারা পুলিশের উপর হামলা চালায়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। সাদ্দামকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয় পুলিশের হাত থেকে। এই ঘটনায় তিন জন পুলিশ আহত হন।

    অভিযোগ, সেই সময় শূন্যে গুলি চালায় সাদ্দামের ভাই সাইরুল। পুলিশ তাকে ধরতে গেলে সেও পালায়। পুলিশ সাদ্দামের স্ত্রী রাবেয়া সর্দার ও সাইরুলের স্ত্রী মাসুদা সর্দারকে গ্রেপ্তার করে। বিকেলে বিশাল বাহিনী নিয়ে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে এক সুড়ঙ্গের খোঁজ পায় পুলিশ।

    পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়িতে একটি সুড়ঙ্গ আছে। যা পাশের খালের সঙ্গে যুক্ত। ওই সুড়ঙ্গ দিয়েই সাদ্দাম ও তার ভাই পালিয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, সকালে সাদ্দামের বাড়ির মহিলারা পুলিশের কাজে বাধা দেয়। সে সময় সাদ্দাম পালায়। এর পরেই বিকেলে কুলতলির আইসি সতীনাথ চট্টরাজের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গিয়ে বাড়িতে তল্লাশি চালান। তখন সাদ্দামের ঘরে ওই সুড়ঙ্গ দেখতে পান তাঁরা।

    তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সাদ্দামের স্টিলের খাটের নীচে রয়েছে আস্ত একটি বড় সুড়ঙ্গ। সেই সুড়ঙ্গ থেকে কংক্রিটের পথ তৈরি করা হয়েছে যা ১৫ ফুট দূরের একটি খালের সঙ্গে সংযুক্ত। এই ঘটনায় পুলিশকর্মীদের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। পুলিশের ধারণা, পুলিশের অভিযানের সময় যাতে কোনও ভাবে সাদ্দাম ধরা না পড়ে এবং সেই সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে যেতে পারে সে জন্যই আগে থেকে পরিকল্পনা করে ঘরের মধ্যে থেকে পাশের খাল পর্যন্ত কংক্রিটের এই বিশেষ সুড়ঙ্গটি তৈরি করে রেখেছিল সাদ্দাম।

    সাদ্দামের মা তসলিমা সর্দার বলেন, ‘পুলিশ সাদা পোশাকে আমার ছেলেকে ধরেছিল। তখন আমরা মহিলারা গিয়ে পুলিশের হাত থেকে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়েছি। তবে ছেলে কোথায় চলে গিয়েছে তা বলতে পারব না।’

    বারুইপুরের পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, ‘এক দুষ্কৃতীকে ধরতে গেলে শূন্যে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। ধাক্কাধাক্কিতে আমাদের পুলিশের কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা দু’জন মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছি। আর পলাতকদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’
  • Link to this news (এই সময়)