সুপ্রিম কোর্টে ৩ সপ্তাহ পিছিয়ে গেল এসএসসি-র চাকরি বাতিল মামলার শুনানি। ৩ সপ্তাহ পরের যে মঙ্গলবার সেই দিন হবে শুনানি হওয়ার কথা। ফলে আপাতত ঝুলেই রইল প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারার ভবিষ্যৎ। এদিন শুনানির সময় মামলার সমস্ত নথি আরও গুছিয়ে অর্থাৎ সংকলতিভাবে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। সেই নথিতে কবে কোন অভিযোগ জমা পড়েছে, বা কোনদিন আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে, তার বিস্তারিত টাইমলাইন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এই গোটা বিষয়টির জন্য কয়েকজনকে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। সেই সমস্ত তথ্য জমা দিলে ৩ সপ্তাহ পরে হবে শুনানি। এই বিষয়ে আদালত আরও জানান হয়েছে, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যেই ৫ পক্ষকে নিজেদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জানাতে হবে। ওই নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে আর কোনও পক্ষের বক্তব্য শোনা হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। আর আদালতের এই নির্দেশের পরেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।এই বিষয়ে চাকরি বাতিলের তালিকায় নাম থাকা স্বর্ণালি চক্রবর্তী নামে এক শিক্ষিকা বলেন, 'টেনশন ছিল, সেটা বজায় থাকল। পৃথকীকরণ (সেগ্রিগেশন) করাটা খুব জরুরি আমাদের জন্য। এসএসসি-র তরফ থেকে যে মুচলেকাটা নেওয়ার কথা ছিল, সেটা এখনও নেওয়া হয়নি। সেটা নেওয়া হলে পৃথকীকরণ করা হয়ে যেত। আমরা সন্তুষ্ট নই।' প্রিয়াঙ্কা চট্টোপাধ্যায় নামে অপর একজন বলেন, 'পৃথকীকরণ যেন ঠিকভাবে হয়। তার জন্য যত সময়ই লাগুক কোনও অসুবিধা নেই। আমরা আশাবাদী যে বিচার পাব।'
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০১৬ সালের নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি সব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানান হয়। মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। মামলা ওঠে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে। গত ৭ মে কলকাতা হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দেয় শীর্ষ আদালত। গত শুনানিতে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, 'কেন সুপারনিউমেরিক পোস্ট তৈরি করতে চাওয়া হয়েছিল?' সেই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, নেপথ্যে রাজ্যের কোনও খারাপ অভিসন্ধি ছিল না। তারপরেই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ দেওয়া হয় ১৬ জুলাই। কিন্তু, এদিন ৩ সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে গেল সেই মামলার শুনানি।