ফের সালিশি সভায় বর্বরতা, জুতোর মালা পরিয়ে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হল যুগলকে
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৬ জুলাই ২০২৪
ফের সালিশি সভায় সামনে এল মধ্যযুগীয় বর্বরতা। এবার যুগলকে মুখে চুলকালি মাখিয়ে, গলায় জুতোর মালা পরিয়ে বিবস্ত্র করে গ্রামে ঘোরানো হল। এমনই অভিযোগ উঠেছে মালদার কালিয়াচকে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জড়িত থাকারও অভিযোগে পুলিশ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রামের মোড়ল, মাতব্বরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে। অভিযোগ, এছাড়াও যুগলকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয়েছে। ঘটনায় দুজনেরই চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধুর সঙ্গে প্রতিবেশী এক যুবকের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। এরপরেই দুজনের বিচার করার জন্য সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। বামনগ্রাম-মসিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ওই গ্রামে সালিশি সভার আগে দুজনকে প্রথমে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর সিপিএমের এক পঞ্চায়েত সদস্যের হস্তক্ষেপে গ্রামে সালিশি সভা বসে।
সালিশি সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দুজনকে মুখে চুলকালি মাখিয়ে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হবে। সেইমতোই গ্রামে এভাবে তাদের কয়েক ঘণ্টা ধরে ঘোরানো হয়। আর সেই সঙ্গে তাদের ওপর চলে অত্যাচার। দীর্ঘক্ষণ ধরে অত্যাচারের ফলে দুজনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়, এমন ঘটনার পর আনন্দে পটকাও ফাটায় বেশ কয়েকজন। সেই ছবি মোবাইলে ক্যামেরা বন্দি করেন অনেকেই। এরপর ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। লালবাজারে পর্যন্ত সেই ভিডিয়ো পৌঁছে যায়।
বিষয়টি জানতে পেরেই কালিয়াচক থানার পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের তরফে। পরে পুলিশ পৌঁছে মহিলা ও যুবককে উদ্ধার করে। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে, ঘটনায় মহিলার পরিবারের তরফে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেই ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। গ্রামের মোড়ল, মাতব্বর সহ ১৮ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পাশাপাশি আরও কেউ এরসঙ্গে জড়িত কি না তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এবং আইনি পদক্ষেপের দাবি করেছে।