সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর কাছে পরাজিত হয়েছেন পেশায় চিকিৎসক সুভাষ। আর সেই সুভাষকে হারানোর নেপথ্যে বিজেপিরই এক বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায় কাজ করেছেন বলে দাবি করে পড়ল পোস্টার। সেই পোস্টারে লেখা 'ডাক্তার বাবুকে হারানোর মূল কারিগর সত্যনারায়ণ দূর হঠো'। একইসঙ্গে লেখা, ছাতনা ও শালতোড়ায় বিজেপিকে শেষ করার মূল কারিগর সত্যনারায়ণ দূর হঠো'। ছাতনার বিজেপি বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। আর তাঁর বিরুদ্ধে এমনই পোস্টার পড়ল ওই বিধানসভা এলাকার ঝাঁটিপাহাড়ি চকবাজার এলাকায়। রাতের অন্ধকারে কে বা কারা ওই পোষ্টার দিল, তা এখনো স্পষ্ট নয় কারও কাছেই।প্রসঙ্গত, এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে ফের একবার বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তৎকালীন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর কাছে পরাজিত হন তিনি। আর তারপরেই বিজেপি প্রার্থী পরাজয় নিয়ে দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়। এবার এই হারের নেপথ্যে বিজেপি বিধায়ককেই দায়ী করে পোষ্টার ঘিরে পড়ল পোস্টার, যা ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সাদা কাগজের উপর প্রিন্ট করে ওই পোষ্টারে লেখা রয়েছে, 'ডাক্তারবাবুকে হারানোর মূল কারীগর সত্যনারায়ণ মুখার্জী দূর হঠো। ছাতনা ও শালতোড়ায় বিজেপিকে শেষ করার মূল কারিগর সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায় দূর হঠো।' এই বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায় টেলিফোনে বলেন, 'রাজনীতির মধ্যে থাকা দুষ্টু লোকেরাই এসব করছে। বিষয়টিকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছি না।' তবে দলের অভ্যন্তরে এই বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে ছাতনার বিজেপির মণ্ডল ২-এর সভাপতি সিতাংশু রক্ষিতের দাবি, পুরো বিষয়টিই শাসকদলের চক্রান্ত। এই এলাকায় বিজেপির সংগঠন যথেষ্ট মজবুত, আর বেশ কয়েকটি বুথে আমরা এগিয়ে আছি। সেই বিষয়টি সহ্য করতে না পেরেই তৃণমূল এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।'
এদিকে এই বিষয়ে বিজেপির তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের জেলা কমিটির সহসভাপতি পরেমেশ্বর কুণ্ডু বলেন, 'ওদের (বিজেপি) দাবি অমূলক। আমরা মানুষের সঙ্গেআছি, পাশে আছি। যা হয়েছে তা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।' উল্লেখ্য, এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সময় বাঁকুড়ায় বিজেপির অভ্যন্তরেই সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখা যায়। যদিও বিজেপি জেলা নেতৃত্ব অবশ্য কোনও সময়ই সেই সমস্ত বিক্ষোভকে গুরুত্ব দেয়নি। তবে এবার এই পোস্টার বাঁকুড়ায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের জল্পনাকে ফের একবার উস্কে দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ।