মুর্শিদাবাদে ফের বাম-কংগ্রেস জোটে ভাঙন, রানিনগরে তৃণমূলে যোগ দুই পঞ্চায়েত প্রধানের
প্রতিদিন | ১৭ জুলাই ২০২৪
অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: লোকসভা ভোটের পর বিরোধীদল থেকে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক অব্যাহত। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবারের পর সোমবার ফের কংগ্রেসের দুই পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্য মিলিয়ে মোট ৮ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেন। সোমবার বিকেলে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মাহাবুব মুর্শিদের বাসভবনে তাঁরা তৃণমূলের যোগ দেন। দলের নবাগত কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান। উপস্থিত ছিলেন রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন-সহ অনেকে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বাম কংগ্রেস জোটের অন্যতম সংগঠক মাফরোজা খাতুন, মান্নাত হোসেন ও তাঁদের অনুগামীরা শাসক শিবিরে যোগ দেন। মাফরোজা রানিনগর ২ ব্লকের কাতলামারী ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। মান্নাত কালীনগর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান। তৃণমূলে (TMC) যোগ দিয়ে দুই প্রধানই জানান, “মানুষের উন্নয়নের কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান হয়েছিলাম। কিন্তু জোট নেতৃত্বের অত্যাচারে সেই কাজ করতে পারছিলাম না। উন্নয়নের কাজে বাধা আসছিল। তাই তৃণমূলে যোগ দিলাম। তাছাড়া সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলার মানুষ তৃণমূলের পক্ষে রায় দিয়েছেন। সেখানে আমরা বিরোধীতা করে কি করব? ওই ভাবনাতেই তৃণমূলে যোগ দেওয়া।”
যদিও কংগ্রেসের মুর্শিদাবাদ (Murshhidabd) জেলার সম্পাদক জাহাঙ্গীর ফকির জানান, “ইদানিং দলত্যাগীদের বাঁধা বুলি হয়ে গিয়েছে উন্নয়ন করতে তৃণমূলে যোগ দিলাম। তাতে এটা প্রমান হয়, বিরোধী প্রধানদের কাজে তৃণমূল সরকার তাঁদের প্রাপ্য ভাগ থেকে বঞ্চিত করে রেখে নিজেদের দলে যোগদিতে বাধ্য করছে।” সাংসদ (MP) আবু তাহের খান অবশ্য জানান, “উন্নয়ন দেখেই প্রধান ও সদস্যরা তৃণমূলে আসছেন।” গত ১৪ দিনে রানিনগর ২ ব্লকে বাম কংগ্রেস জোটের ৫ প্রধান তৃণমূলে যোগ দিলেন। তাঁদের মধ্যে ১ জন প্রধান সিপিএমের (CPM)।
পঞ্চায়েত ভোটের পর এই ব্লকে ৯ টি পঞ্চায়েতের ৫ টি ছিল কংগ্রেসের। তৃণমূলের ৩ টি ও সিপিএমের দখলে যায় ১ টি পঞ্চায়েত। গত কয়েক দিনে পদ্মানদীর সেই পহেল চাপা ধসের মতোই বাম-কংগ্রেস জোটে ভাঙন ধরিয়ে জোটের ৫ পঞ্চায়েতের প্রধানকে তৃণমূলের শিবিরে আনা হল। ফলে ব্লকে তৃণমূলের প্রধান সংখ্যা দাঁড়াল ৮। কংগ্রেসের হাতে বেঁচে থাকল ১ টি পঞ্চায়েত। সেই পঞ্চায়েতও তৃণমূলের নজরে রয়েছে। কার্যত তা স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূলের রানিনগর বিধানসভার বিধায়ক সৌমিক হোসেনের কথায়। তিনি বলেন, “আগামী দিনে রানিনগর ২ ব্লকে কংগ্রেস-সিপিএমের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না।”