• উৎপাদিত পেঁয়াজ ৮ টাকায় বিক্রি করে ৫০ টাকায় কিনছেন চাষিরা
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: পেঁয়াজ ওঠার মুখে চাষিরা দাম পেয়েছেন কেজি পিছু সাত থেকে আট টাকা। যদিও মাস দুয়েক যেতেই এখন সেই পেঁয়াজ তাঁদেরই বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরাও পড়েছেন বিপাকে। গত কয়েক মাসে হু হু করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এখন বাজারে ভালো পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে রীতিমতো ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে আমজনতাকে। পেঁয়াজের ড্রাই সিজনে নিজেদের উৎপাদিত ফসলের দামের ঝাঁজে চোখে জল পেঁয়াজ চাষিদের। প্রতিবছর যে দামে বাজারে পেঁয়াজ ছেড়ে দিতে হয়, তার থেকে অনেক বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে খেতে হচ্ছে চাষিদের। এবার যেন দামটা অনেকটাই বেশি। চাষিদের থেকে কিনে পেঁয়াজ রেখে দেওয়ার কিছুদিন পর এক শ্রেণির ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে বাজারে ছাড়ছেন। চাষিরা দাম না পেলেও, ফড়েরা আমজনতার পকেট কাটছে বলে অভিযোগ। 


    পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, গত দু’মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বেশ কিছুদিন ধরে জেলার সদর শহর বহরমপুরের বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কোথাও কোথাও আবার দাম ৬০ টাকা কেজি। মফস্সলের হাটে-বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। পাইকারি বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা কেজিতে। ফলে খুচরো বিক্রেতারা খুব একটা দাম কমাতে পারছেন না। 


    পেঁয়াজ চাষিদের অভিযোগ, এবছর পেঁয়াজ ওঠার মুখে দাম পেয়েছেন সাত থেকে বড় জোর আট টাকা কেজি। পেঁয়াজ সংরক্ষণের স্থায়ী বন্দোবস্ত না থাকায় খেত থেকে তোলার পরেই পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে হয়েছে। সেই সময় পেঁয়াজের দামও কম থাকে। এখন অনেককেই সেই পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে কিনে খেতে হচ্ছে।


    রাজ্যের কৃষি বিপণন বিভাগের মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে পেঁয়াজের দাম ৫৫ টাকা কেজি। আমাদের সরকারি সুফল বাংলা বিপণিতে ক্রেতারা ৩৯ টাকা কেজি দরে কিনতে পারছেন। পেঁয়াজের দাম আরও যাতে কমানো যায়, তার চেষ্টা চলছে। চাষিদের থেকে সরাসরি পেঁয়াজ কেনার চেষ্টা করছি।


    জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা বলেন, পেঁয়াজের দাম বাজারে অনেকটাই বেশি। তবে চাষিরা যে সময় পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন, খুব একটা দাম পাননি। আমরা সরকারি সুফল বাংলায় সরাসরি চাষিদের থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে বিক্রি করার চেষ্টা করব। তাহলে চাষিদের কিছুটা সুরাহা হবে।


    পেঁয়াজ চাষি খলিল গাজি বলেন, পেঁয়াজ তো ঘরে বেশিদিন রাখা যায় না। আমাদের জেলায় সংরক্ষণের তেমন সুযোগ নেই। তাই সিজনের সময় কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে হয়। পরে ড্রাই সিজনে পেঁয়াজের দাম বাড়লেও আমাদের মতো সাধারণ চাষিরা কোনও লাভ পান না। আমাদের বেশি দামে কিনে খেতে হয়। 


    জেলার উদ্যান পালন বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, এই সময়টা প্রতিবছর পেঁয়াজের দাম ৪০-৫০ টাকা হয়। চাষিরা মরশুমের শুরুতে পেঁয়াজ বিক্রি করে দিয়ে অন্য ফসল লাগানোর কাজ করেন। তখন একসঙ্গে বাজারে অনেক পেঁয়াজ চলে আসায় ভালো দাম পাওয়া যায় না।
  • Link to this news (বর্তমান)