নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: ছাতনায় বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে পোস্টার ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ছাতনার ঝাঁটিপাহাড়ি এলাকায় দেওয়ালে পোস্টার দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। সেই পোস্টার ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের জন্য বিধায়ককে ‘মূল কারিগর’ বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে এই পোস্টার কে বা কারা দিয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি। ফলে দিনভর তা নিয়েও চর্চা চলেছে। বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তার জেরে তরজায় তপ্ত বাঁকুড়ায় রাজনৈতিক পরিসর। পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘ডাক্তারবাবুকে হারানোর মূল কারিগর সত্যনারায়ণ দূর হটো’। এছাড়াও লেখা হয়েছে, ‘ছাতনা ও শালতোড়ায় বিজেপিকে শেষ করার মূল কারিগর সত্যনারায়ণ দূর হটো’।
লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার প্রায় দেড় মাস পর এই পোস্টার ঘিরে ছাতনায় বিজেপির অন্দরেও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, পোস্টারে সত্যনারায়ণ বলতে ছাতনার বিজেপি বিধায়ককে উদ্দেশ্য করে অভিযোগ তোলা হয়েছে। উল্লেখ্য, এবারের লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের গড় হারিয়েছে গেরুয়া শিবির। বাঁকুড়া কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ডাক্তার সুভাষ সরকার প্রায় ৩৩ হাজার ভোটে তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। এমনকী, ছাতনা ও শালতোড়া দু’টি বিধানসভায় বিজেপি বিগত ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে জিতেছিল। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই দু’টি বিধানসভাতেই বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে বিজেপির পরাজয়ের প্রসঙ্গে পোস্টার দিয়ে ছাতনার বিজেপি বিধায়ককে দায়ী করা হয়েছে।
পোস্টার প্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপি বিধায়ক বলেন, আমি দলের একনিষ্ঠ কর্মী। দলীয় প্রতীকে যিনিই প্রার্থী হন, তাঁকে জেতানোই আমার কাজ। এবারের ভোটেও সেই কাজই করেছি। দল ও প্রার্থী সেটা ভালো করেই জানেন। পোস্টারে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে তা জানা নেই। আমার বদনাম করতেই এমন চক্রান্ত করা হচ্ছে। দল তদন্ত করে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পরাজিত বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার বলেন, রাজনৈতিক অভিসন্ধি করে তৃণমূলের লোকেরাই এই পোস্টার দিয়েছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ছাতনা ও শালতোড়া বিধানসভা দখল করার লক্ষ্যে তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করে পোস্টার দিয়েছে। কিন্তু এতে তৃণমূলের কোনও লাভ হবে না। আবার সেখানে বিজেপিই জিতবে।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ছাতনার তৃণমূল নেতা পরমেশ্বর কুণ্ডু বলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বাঁকুড়ায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। পোস্টারের ঘটনাও তাদের অপর গোষ্ঠীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। নির্বাচনে হেরে তৃণমূলের নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিজেপি এলাকায় জিতেও কোনও কাজ করেনি। তাই মানুষ এবার তৃণমূলকে আশীর্বাদ করেছেন।