• আকাশে মেঘ দেখলেই বন্ধ রাখতে হয় করিমপুরের একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: আকাশে মেঘ দেখলেই বন্ধ রাখতে হয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। নিজস্ব ঘর না থাকায় করিমপুর-১ ব্লক এলাকার বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খোলা আকাশের নীচে রান্না হয়। তাই বৃষ্টি এলে কিংবা প্রচণ্ড রোদে সমস্যায় পড়তে হয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও উপভোক্তাদের।


    করিমপুরের নাটনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাশাপাশি ৭৬ ও ২৭০ নম্বর দু’টি কেন্দ্রেই দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নীচে রান্না হয়। মা ও বাচ্চাদের বসার কোনও জায়গা নেই।  কেন্দ্রের কর্মী মধুমিতা প্রামাণিক বলেন, এই কেন্দ্রে প্রসূতি, গর্ভবতী মা সহ মোট ৪৫ জন উপভোক্তা রয়েছে। বৃষ্টি হলে রান্না বন্ধ রাখতে হয়। এখানে দু’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য ২০২০ সাল থেকে দু’টি পাকা ঘর তৈরির কাজ চলছে। ঘরের কাজ শেষ হয়ে গেলেও সেই ঘর আমাদের হাতে দেওয়া হয়নি। ফলে বাইরে খোলা জায়গায় রান্না করতে হচ্ছে। রোদে, বৃষ্টিতে মা বাচ্চাদের বসার জায়গাটুকুও নেই। খুবই সমস্যায় পড়তে হয়।


    একই সমস্যা পাশের কেন্দ্রেও। ওই কেন্দ্রের কর্মীর রুপালি প্রামাণিক বলেন, এখানে সরকারি প্রাইমারি স্কুলের ঘর বা বারান্দা ব্যবহার করতে দেয় না। আবার নবনির্মিত ভবনও এখনও পর্যন্ত আমাদের দেওয়া হয়নি। ফলে শীত, বর্ষা, গরমে এই গাছের নীচে বাচ্চাদের পড়াতে ও রান্না করতে হয়। যেদিন বৃষ্টি হয় সেদিন রান্না, পড়ানো কিছুই সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়। পরের দিন খাবার রান্না করে দেওয়া হয়। 


    বাচ্চাদের সামান্য বসার ঘর না থাকায় চরম অসুবিধা হয় বলে অভিযোগ এলাকার অভিভাবকদের। করিমপুরের অভিভাবক পম্পা শীল, মুর্শিদা বিবির অভিযোগ, ফাঁকা জায়গায় বসতে রোদে যেমন কষ্ট হয়, তেমনই বর্ষাকালে কোথাও একটু দাঁড়ানোর জায়গা  নেই। খোলা জায়গায় রান্না হয়। ফলে খাবারে কিছু পড়লে যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে। সেই  ভয়ে আমাদের থাকতে হয়। 


    শুধুমাত্র নাটনা সুধাংশুবালা প্রাথমিক বিদ্যালয়েই একসঙ্গে মোট চারটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে। এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী দীপনীতি কর্মকার বলেন, ২৬৬ নম্বর কেন্দ্রটি বছর দশেক ধরে অন্যের বাড়িতে চলছিল। কিন্তু বর্তমান নির্দেশে এই স্কুলেই কেন্দ্র চলছে। এখানে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের একটি মাত্র নিজস্ব ঘর রয়েছে। সেই ঘরে দু’টি কেন্দ্রের বাচ্চারা পড়াশোনা করে। কিন্তু, রান্নার জন্য কোনও পাকা ঘর নেই। একটি চালার নীচে দু’টি কেন্দ্রের খাবার রান্না হয়। আর দু’টি কেন্দ্র চলে বিদ্যালয়ের ঘরে। 


    করিমপুর-১ ব্লকের সিডিপিও তাপস বিশ্বাস বলেন, ব্লকের ৩১১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মধ্যে প্রায় ১৪৭টি কেন্দ্রের নিজস্ব ঘর রয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৫০টি কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং কিছু স্থানীয় ক্লাবঘর অথবা কোনও বাড়িতে ভাড়া বাড়িতে চলে। ১৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিজস্ব ঘরের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তা শেষ হলেই ওই কেন্দ্রগুলিও সেখানে চালু হয়ে যাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)