• অধ্যাপকদের একাংশের অনিয়মিত ক্লাস, ক্ষোভ
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন না। তাঁদের মধ্যে একজন আবার সপ্তাহে একটি বা দু’টি ক্লাস নেন। শিক্ষাদপ্তরে এমনই রিপোর্ট পাঠাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য গৌতম চন্দ্র বলেন, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়মিত ক্লাস নেওয়া উচিত। তাঁদের দায়িত্ব অনেক বেশি। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব পালন হচ্ছে না। একজন শিক্ষক আমাকে স্বৈরাচারী বলেছেন। কিন্তু ওই শিক্ষকের ক্লাসে কতটা ভূমিকা রয়েছে তার খোঁজ নিলেই জানা যাবে। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার জন্যই পুরো বিষয়টি শিক্ষাদপ্তরের নজরে আনা হবে। 


    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ইসির বৈঠক না হওয়ায় একাধিক সিদ্ধান্ত থমকে রয়েছে। কয়েকজনের প্রমোশন আটকে রয়েছে। এছাড়া আর্থিক বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। কয়েকদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসির বৈঠক ডাকা হয়। কিছু কর্মী, অধ্যাপক এবং পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরে সেই বৈঠক ভেস্তে যায়। ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে ইসি বৈঠক করতে দেওয়া উচিত ছিল। যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ওই বৈঠকে নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক আধিকারিক বলেন, স্থায়ী উপাচার্য ছাড়া ইসি মিটিং করা যায় না। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য রয়েছেন। স্থায়ী উপাচার্য এলেই ইসি মিটিং হবে।


    বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন চরমে উঠেছে। বেশ কয়েকবার তা প্রকাশ্যে এসেছে। ইসির বৈঠকের দিনও এক অধ্যাপক উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে স্লোগান দেন। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে তিনি স্বৈরাচারী বলে কটাক্ষ করেন। তাঁকে পাল্টা জবাব দেন ভিসিও। তিনি বলেন, স্বৈরাচারী কিনা তা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা জানে। ছাত্রছাত্রীদের ভালো চাইলে উনি ক্লাস ফাঁকি দিতেন না। আর এক আধিকারিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখতে ইসির বৈঠক অত্যন্ত জরুরি। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে পড়াশোনাও ব্যাহত হবে। সম্প্রতি প্রাক্তন মাওবাদী নেতা অর্ণব দামকে ভর্তি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। একপক্ষ প্রথম থেকেই তাঁকে ভর্তি নিতে মরিয়া ছিলেন। অন্যপক্ষ তাঁর ভর্তি নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছিল। আচমকা ইতিহাস বিভাগের কাউন্সেলিংও বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেশ কিছুদিন জলঘোলা হওয়ার পর জটিলতা কাটে। ইতিহাস বিভাগের কাউন্সেলিং হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের কান পাতলেই বেশকিছু প্রশ্ন শোনা যাচ্ছে। পড়ুয়াদের নিয়ে কোন পক্ষ বেশি আন্তরিক তা নিয়েও দড়ি টানাটানি চলছে। তবে কয়েকজন অধ্যাপক নিয়মিত ক্লাস না করায় পড়ুয়াদের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। তাঁদের দাবি, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন পড়াশোনার পরিবেশ যেন বজায় থাকে। কর্তৃপক্ষের দাবি, অধিকাংশ অধ্যাপকই দায়িত্ববান। কিন্তু কয়েকজন তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন না। সেকারণেই বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরের নজরে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)