বৌদ্ধস্তূপ ও রণডিহা ব্যারেজ ঘিরে ট্যুরিজম প্রকল্প এগয়নি
বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, মানকর: সামনেই পুজোর মরশুম শুরু হবে। ভিড় জমবে রাজ্য ও জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে। কিন্তু এবারও হয়তো বুদবুদের ভরতপুর ও কসবা পর্যটকশূন্য হয়েই থাকবে। বছর দু’য়েক আগে ভরতপুরের বহু পুরনো বৌদ্ধস্তূপ, কসবায় চাঁদ সওদাগরের শিব মন্দির, লোহার বাসরঘর এবং রণডিহা ব্যারেজ নিয়ে ইকো ট্যুরিজম সেক্টর গড়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও কোনও কাজ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতের ভরতপুর বৌদ্ধস্তূপকে কেন্দ্র করে ইকো ট্যুরিজম সেক্টর গড়ার জন্য রাজ্যের কাছে আবেদন করেছিল গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতি। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ভরতপুর এলাকার জমি ও বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১সালের জুলাই মাসে তাঁর পরিদর্শনের পরই এলাকার বাসিন্দারা আশার আলো দেখেছিলেন। দ্রুত ইকো ট্যুরিজম গড়ে উঠবে বলে তাঁরা ভেবেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও সেভাবে কাজ হয়নি। ১৯৭১-’৭২ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার যৌথ উদ্যোগে ভরতপুরে খননকার্য করা হয়। সেইসময় একটি বৌদ্ধস্তূপের সন্ধান মেলে। বুদ্ধের একাধিক মূর্তিও মিলেছিল। মনে করা হয় এই বৌদ্ধ বিহারটি উপাসনা, পূজার্চনা ও অধ্যাপনার কাজে ব্যবহার করা হতো। গতবছর জানুয়ারি মাসে খননকার্য করা হয়। তখনও নবম ও দশম শতকের একাধিক স্থাপত্যের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। একটি ঘর বা কক্ষ তার মধ্যে রয়েছে। সেই কক্ষের বাইরে একটি প্রাচীরের নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। ভরতপুরে প্রাচীন কৃষিভিত্তিক সভ্যতার জন্ম হয়েছিল বলে অনেকের অনুমান। বৌদ্ধস্তূপটি হাজার বছরেরও বেশি পুরনো।
স্থানীয়দের বক্তব্য, এই এলাকায় ইকো ট্যুরিজম গড়ে উঠলে বাইরে থেকে বহু মানুষ আসবেন। এলাকায় অর্থনীতির উন্নতি হবে। পানাগড়ের বাসিন্দা নির্মলচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দু’টি রাস্তা দিয়ে ভরতপুর ও রণডিহা যাওয়া যায়। একটি পানাগড় সিলামপুর হয়ে, অন্যটি বুদবুদের নস্করবাঁধ হয়ে। আগে দু’টি রাস্তাই বেহাল ছিল। প্রশাসন দু’টি রাস্তাই নতুনভাবে করে দিয়েছে। ফলে ছুটির দিনে অনেকে রণডিহায় ঘুরতে আসেন। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় ভরতপুরের বৌদ্ধস্তূপ বা কসবার বেহুলা লখিন্দরের লোহার বাসরঘর, চাঁদ সওদাগরের পূজিত শিব দেখতে যেতে পারেন না পর্যটকরা। অনেকে এই জায়গাগুলির গুরুত্ব জানেন না। স্থানীয় বাসিন্দা জনার্দন কোনার বলেন, ইকো ট্যুরিজম হলে এলাকার বহু ছেলে কাজ পাবে। এলাকার অর্থনীতির উন্নতি হবে। গলসি-১ বিডিও জয়প্রকাশ মণ্ডল বলেন, জায়গাটি সংরক্ষিত হয়ে আছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া দেখভাল করছে।-নিজস্ব চিত্র