সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর আগেই খসে পড়ছে সিলিং। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন সুপার স্পেশালিটি ব্লকের এই বেহাল অবস্থায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাইরে থেকে দেখতে সুন্দর ঝাঁ চকচকে আধুনিক বহুতল ভবন। কিন্তু, নিম্নমানের কাজের ফলে বৃষ্টি শুরু হতেই নানা ত্রুটি ধরা পড়তে শুরু করেছে। দেওয়ালের জায়গায় জায়গায় ড্যাম্প ধরেছে। তারজন্যই কাঠামো সহ সিলিং খসে পড়ছে বলে অভিযোগ। সুপার স্পেশালিটি ব্লকের ভিতরে একটি ঘরে খসেপড়া সব সিলিং ও তার কাঠামো স্তূপ করে রেখে দেওয়া হয়েছে।
দু’বছরও হয়নি সুপার স্পেশালিটি ব্লক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করার। নানা টালবাহানায় এখনও সুপার স্পেশালিটি ব্লক চালু হয়নি। কিছু বিভাগের আউটডোর পরিষেবা শুরু হয়েছে। এটাকে আশীর্বাদ হিসেবেই মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে রোগী ভর্তি থাকত। সেসময় কোনও ওয়ার্ডে সিলিং খসে পড়লে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এভাবে সিলিং খসে পড়ায় সুপার স্পেশালিটি ব্লক কতটা নিরাপদ সেই প্রশ্ন ও আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সুপার স্পেশালিটি ব্লকের ভবন তৈরি করার পর সেই কাজের মান যাচাইয়ের জন্য ঠিকমতো নজর দেওয়া হয়নি।
সুপার স্পেশালিটি ব্লকের নোডাল অফিসার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ডিন ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সি অনুমোদিত একটি নির্দিষ্ট নকশায় এই বহুতল ভবন তৈরি করেছে। তাদের কাজের মান খারাপ হবে এটা আমরা ভাবতে পারিনি। সুপার স্পেশালিটি ব্লক হস্তান্তরের কিছুদিন পর থেকেই দেখা যায় বৃষ্টি হতেই বহু জায়গায় দেওয়ালে ড্যাম্প ধরছে। এবার প্রবল বর্ষণের পর বহু জায়গায় অনেকটা এলাকা নিয়ে ফল্স সিলিং খসে পড়তে শুরু করেছে। এতে বড় বিপদ হতে পারে। তাই আমরা সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা এই খসে পড়া সিলিং মেরামত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কাজেই এখন তাদের অপেক্ষায় থাকা ছাড়া আমাদের এক্ষেত্রে করার কিছু নেই।
এভাবে জায়গায় জায়গায় দেওয়ালে ড্যাম্প ধরায় দামি চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার দিকটি অস্বীকার করছেন না চিকিৎসকরা। ডিন আরও বলেন, যে যে ত্রুটি ধরা পড়ছে তা সবই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে জানানো হয়েছে। তারা সেসব ত্রুটি মেরামত করে দিয়ে যাওয়ার পর আবার যদি কোনও ত্রুটি বা সমস্যা দেখা দেয় তাহলে সেটা আমাদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মেরামত করতে হবে।
কিন্তু, প্রশ্ন উঠেছে নতুন এই ভবনের শুরুতেই এভাবে ফল্স সিলিং কেন খসে পড়ছে, তাহলে এই ভবন কতটা নিরাপদ। শুধু সিলিং খসে পড়াই নয়, ভবনের বাইরেও জল জমে গিয়ে শ্যাওলা ধরেছে। সব মিলিয়ে সুপার স্পেশালিটি ব্লক নির্মাণে কেন্দ্রীয় এজেন্সির নিম্নমানের কাজের দিকটি প্রকট হয়ে উঠছে। নিজস্ব চিত্র