মন্ত্রীর উদ্বোধন করা ২০ বেডের মেডিসিন ওয়ার্ডে তালা, চরম ভোগান্তি রোগীদের
বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
সোমেন পাল, গঙ্গারামপুর: ব্যবস্থা রয়েছে। শুধুমাত্র সদিচ্ছার অভাবে ভোগান্তি বাড়ছে রোগীদের। গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৫০টি বেডে গাদাগাদি করে ভর্তি রাখা হয়েছে ১১০ জন মহিলাকে। অথচ মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের উদ্বোধন করা ২০ বেডের মেডিসিন ওয়ার্ডে ঝুলছে তালা। সেটি খুলে দিলে হয়রানি কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু করবে কে? গত বছর অক্টোবরে ঢাকঢোল পিটিয়ে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে দিয়ে ২০ বেডের ওয়ার্ডের উদ্বোধন করায়। হাসপাতালের চতুর্থ তলায় জেনারেল মেডিসিন মহিলা বিভাগে অতিরিক্ত ২০ বেডের পরিষেবার ফিতে কাটা হলেও পরিষেবা মিলছে না। এক্ষেত্রে আঙুল উঠছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের দিকে। হাসপাতালে পঞ্চম তলায় রয়েছে ৫০ বেডের জেনারেল মেডিসিন মহিলা বিভাগ। সর্দি, কাশির মরশুমে রোগীর চাপ থাকায় ৫০ বেডে রাখা হয়েছে প্রায় ১১০ জনকে। তারপরেও ২০ বেডের অতিরিক্ত জেনারেল মেডিসিন মহিলা বিভাগ তালাবন্ধ থাকায় রোগী এবং পরিজনদের একাংশ ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে বিন্দুমাত্র নজরদারি করে না জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, রোগী না থাকায় প্রথম দিকে খোলা হত না। চাপ থাকার পরেও কেন ২০ বেডের পরিষেবা চালু হচ্ছে না, সুপারের সঙ্গে কথা বলে জানব।
সুপার বাবুসোনা সাহার কথায়, অতিরিক্ত ২০ বেডের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড খুলতে উদ্যোগ নিয়েছি। পর্যাপ্ত নার্সিং স্টাফ না থাকায় চালু করা যাচ্ছে না। এখন মহিলা বিভাগে রোগীর চাপ রয়েছে। চেষ্টা করছি ঠিকমতো পরিষেবা দিতে।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে জ্বর ও পেটের সমস্যা নিয়ে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন রোগীরা। পর্যাপ্ত বেড না থাকায় এক বেডে দু’জন, তিনজন করে রেখে চিকিত্সা করা হচ্ছে। গঙ্গারামপুর জাহাঙ্গীরপুরের রেশমা খাতুন বলেন, জ্বর নিয়ে ১৪ জুলাই থেকে ভর্তি রয়েছি মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে। গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে বেডে। অতিরিক্ত ওয়ার্ড চালুর পরেও কেন সেখানে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না বুঝতে পারছি না। হাসপাতালের গাফিলতির জন্য আমাদের ফল ভুগতে হচ্ছে।
বিপ্লব মিত্র বলেন, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর অতিরিক্ত ২০ বেডের মহিলা বিভাগের উদ্বোধন করতে ডেকেছিল। তারপর থেকে সেই ওয়ার্ড তালাবন্ধ রয়েছে, এমন অভিযোগ পাইনি। সেরকম হয়ে থাকলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে জানতে চাইব কেন বন্ধ রয়েছে।
বেহাল পরিষেবা প্রসঙ্গে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দাসের মন্তব্য, রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিলেও এই হাসপাতালে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। একদিন পর সমিতির বৈঠক রয়েছে। সেখানে সবকিছু নিয়ে আলোচনার পর রাজ্যকে জানানো হবে।