খড়্গহস্ত হাইকোর্ট, আবার প্রশ্নের মুখে প্রাথমিকের ৪২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ২০১৪ সালের প্রাথমিক-টেট নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। নষ্ট হয়ে যাওয়া ওএমআর শিটের তথ্য সম্বলিত হার্ড ডিস্ক হাতে পেতে এখনও মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সিবিআই। আর ঠিক এসবের মাঝেই মঙ্গলবার ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই সংক্রান্ত পুরনো প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা।
ওই প্রাথমিক টেটের ভিত্তিতে দু’বছর পর, ২০১৬ সালে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলির ৪২ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই যত বিপত্তি! এসংক্রান্ত একাধিক অনিয়মের অভিযোগে ভূরি ভূরি মামলা দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে। এদিন তেমনই একটি মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি অমৃতা সিন্হার এজলাসে। সোমনাথ সেন সহ বেশ কিছু মামলাকারীর অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী ওই বছর ৫ শতাংশের একটি অতিরিক্ত প্যানেল প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু তা প্রকাশ করা হয়নি। মামলাকারীর আইনজীবী এই বক্তব্য পেশ করার পরই ২০১৬ সালের নিয়োগ সংক্রান্ত মূল প্যানেল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। পর্ষদের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ‘ওই ৪২ হাজার নিয়োগের তালিকা কোথায়? কারা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি পেয়েছিলেন?’ জবাবে পর্ষদের আইনজীবী জানান, প্যানেলের মেয়াদ এক বছর থাকে। এখন সেটিকে ‘ডেড’ বা মৃত প্যানেল বলেই ধরতে হবে। সেকথা মানলেও পরক্ষণে বিচারপতি বলেন, ‘প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও নিয়োগের তালিকা থাকা দরকার। কারা যোগ্য এবং কারা চাকরি পেলেন, সেটা ওখান থেকেই জানা সম্ভব। এখন ওই প্যানেল কোথায় রয়েছে? ওই ডেড প্যানেলই প্রকাশ করুন।’ পর্ষদের আইনজীবীর দাবি, ওই প্যানেল আপাতত সিবিআইয়ের কাছে রয়েছে। আদালত বললে সেই নির্দেশ কার্যকর করবে পর্ষদ। সেই বক্তব্য শুনেই বিচারপতি সিন্হা বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে ৪২ হাজার নিয়োগ সংক্রান্ত ওই প্যানেল আদালতে জমা দিতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ জুলাই।
প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির মূল জটিলতা অবশ্য ওএমআর শিট নষ্টের নির্দেশকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত মামলার বিচারভার এসেছে বিচারপতি সিনহার এজলাসে। এর আগে ওএমআর শিটের তথ্য সম্বলিত হার্ড ডিস্ক থেকে তথ্য উদ্ধারের জন্য সিবিআইকে খোলা ছাড়পত্র দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তা উদ্ধার হলেই এই নিয়োগ দুর্নীতির কিনারা সম্ভব বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।