প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণির অন্তর্ভুক্তির দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু শিক্ষাদপ্তরের
বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এবার বাকি ৩৩ হাজার প্রাথমিক স্কুলে ধাপে ধাপে পঞ্চম শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করল শিক্ষাদপ্তর। এর জন্য প্রাথমিক স্কুলগুলির কোনও মেরামতির প্রয়োজন থাকলে এবং বাড়তি ক্লাসরুম তৈরির দরকার হলে তার অর্থ জোগাবে বিকাশ ভবন। এর জন্য আপাতত প্রত্যেক ব্লক এবং মিউনিসিপ্যালিটি থেকে ১০টি করে স্কুলের প্রস্তাব চেয়েছেন স্কুলশিক্ষা কমিশনার। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানদের কাছে আজই গিয়েছে সেই চিঠি।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, শিক্ষার অধিকার আইনেই পঞ্চম শ্রেণিকে আবশ্যিকভাবে প্রাথমিক স্তরে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ২০১৮ সালে প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত করার কাজ শুরু হয়। বিশেষ করে আমাদের রাজ্যেই প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি উচ্চ প্রাথমিকে অন্তর্ভুক্ত ছিল। ধাপে ধাপে অন্তত ৫০ হাজার স্কুলের মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার স্কুলে তা চালু হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ হলে অনেক দিক থেকে লাভবান হবে শিক্ষাদপ্তর তথা সরকার। প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন হাইস্কুল বা মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের চেয়ে অনেকটা কম। সেক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ১৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রী প্রাথমিকে চলে যায়, তাহলে উঁচু ক্লাসে শিক্ষকের চাহিদা কমবে। উল্টে তা বাড়বে প্রাথমিক স্তরে। সব মিলিয়ে বেতন খাতে ব্যয়ভারও কমবে সরকারের। এর পাশাপাশি, হাইস্কুল বা হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের উপরেও চাপ অনেক কমবে।
কীভাবে তৈরি হবে এই তালিকা? ৯ জুলাই একটি ভিডিও কনফারেন্সে ঠিক হয়, স্কুল পরিদর্শক এবং স্থানীয় প্রশাসন স্কুলগুলি বাছাই করবে। যেখানে শিক্ষক আছে, কিন্তু পরিকাঠামো অপর্যাপ্ত, সেগুলি অগ্রাধিকার পাবে। মেরামতির আশু প্রয়োজন রয়েছে, এমন স্কুলগুলিও তালিকায় আসবে। বাজেট তৈরি করে ভেটিং করানোর পরে তা শিক্ষাদপ্তরে পাঠাতে হবে। প্রতিটি স্কুলের জন্য থাকবে একটি করে টপ শিট। ব্লক এবং মিউনিসিপ্যালিটি ভিত্তিক পৃথক ফরওয়ার্ডিং লেটারে স্কুলের তালিকা যাবে। একটি বা দু’টি স্কুল যোগ করার প্রয়োজন হলে বিশেষ ক্ষেত্রে তা করা যাবে।
স্কুল চালু করতে বাড়তি ক্লাসরুমের প্রয়োজনও রয়েছে। স্কুল পরিদর্শকদের মাধ্যমে সমীক্ষা করিয়ে শিক্ষাদপ্তরকে তথ্য জমা দেবেন চেয়ারম্যানরা। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা বলেন,
‘স্কুল বাছাইয়ের পদ্ধতি ঠিক হওয়া উচিত। ব্লক, সার্কেল, পঞ্চায়েতের ইঞ্জিনিয়ার, এসআই বা শিক্ষাবন্ধুদের মাধ্যমে মেরামতির জন্য স্কুল বাছাই করা প্রয়োজন। নাহলে রাজনৈতিকভাবে সেই তালিকা তৈরি হতে পারে। আর ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে বাজেট তৈরি করে তা ভেটিং করে পাঠানোর বিষয়টি খরচসাপেক্ষ। স্কুলগুলির কাছে সেই টাকা আসবে কোথা থেকে?’ তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের অন্যতম শীর্ষ নেতা তথা প্রাথমিক শিক্ষক মইদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন তার কাজ করছে। এ বিষয়ে আমাদের হস্তক্ষেপের কোনও জায়গা নেই।’