এই সময়, কুলতলি: পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া নকল সোনার কারবারি সাদ্দাম সর্দার ও তার ভাইকে ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পরেও ধরতে পারল না পুলিশ। রহস্য সমাধান হয়নি সাদ্দামের বাড়িতে পাওয়া সুড়ঙ্গেরও। এর মধ্যেই মঙ্গলবার সাদ্দামের গ্রাম থেকে ধানখেতে ধাওয়া করে সাদ্দামের এক সহযোগীকে আটক করেছে পুলিশ।দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির জালাবেড়িয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পয়তারহাট গ্রামের বাসিন্দা নকল সোনার মূর্তি বিক্রি চক্রের পাণ্ডা সাদ্দাম সর্দারের বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে সোমবার আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ। অভিযোগ, সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে শূন্যে গুলিও চালায় সাদ্দামের ভাই সাইরুল। বাড়ির মহিলারাই পুলিশের হাত থেকে সাদ্দামকে ছিনিয়ে নেয়। তার পর থেকেই অধরা সাদ্দাম ও তার ভাই।
মঙ্গলবার দুই ভাইয়ের স্ত্রী রাবেয়া সর্দার ও ও মাসুদা সর্দারকে বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক দু’জনকেই সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে পুরুষশূন্য পয়তারহাট গ্রামে আপতার সর্দার নামে সাদ্দামের এক সহযোগীর বাড়িতে এ দিন হানা দেয় কুলতলি থানার পুলিশ বাহিনী ও বারুইপুর জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যরা।
পুলিশকে আসতে দেখে আপতার বাড়ি ছেড়ে ধানখেত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সোমবার সন্ধ্যার আগে সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে ঘরের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে একটি গোপন সুড়ঙ্গ। সেই সুড়ঙ্গ প্রায় ৪০ ফুট দূরে বাড়ি লাগোয়া একটি খালের সঙ্গে সংযুক্ত। পুলিশের অনুমান, এই সুড়ঙ্গ বেশ কয়েক বছর আগেই তৈরি করা হয়েছে।
তবে কোন কাজে ওই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করা হতো তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। সোমবার রাতে ওই গোপন সুড়ঙ্গের মধ্যে তল্লাশি চালানোর সময় ভারী কোনও বস্তু পায়ে ঠেকে তদন্তকারীদের। বাড়িটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাদ্দাম এর আগে একবার ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিল।
বিরোধীদের অভিযোগ, নকল সোনা ও মূর্তি দেওয়ার নাম করে বাইরে থেকে আসা লোকজনকে খুন পর্যন্ত করেছে সাদ্দাম বাহিনী। সেই দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে খালের জলে। কুলতলির বিজেপি নেতা উত্তম হালদার বলেন, ‘তৃণমূল ও পুলিশের একাংশের মদতেই সাদ্দামের ব্যবসার বাড়বাড়ন্ত। প্রতারণা, টাকা লুট এমনকি খুনও করা হয়েছে ওই বাড়িতে।’
সিপিএমের কুলতলি এরিয়া কমিটির সম্পাদক উদয় মণ্ডল বলেন, ‘ওই লোক ঠকানো ব্যবসায় স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের যোগসাজস রয়েছে।’ অভিযোগ উড়িয়ে কুলতলির তৃণমূল বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘সাদ্দাম তৃণমূলের কেউ নয়। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করুক।’