আজকাল ওয়েবডেস্ক : মুর্শিদাবাদ জেলার ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে ক্রমবর্ধমান দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে মঙ্গলবার জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার উদ্যোগে সামশেরগঞ্জ ডাকবাংলো এলাকায় চালু হয়েছে অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা। মঙ্গলবার এই ব্যবস্থার উদ্বোধনে জেলা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে হাজির ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠান পর্বে তিনি নিজে হাতে হেলমেটবিহীন বাইক চালকদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন নতুন হেলমেট।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির জেলা পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা কড়া ভাষায় জানিয়েছিলেন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সকলকে হেলমেট পরে মোটরসাইকেল চালাতে হবে। অথচ এই ঘটনার ২৪ ঘন্টা কাটার আগেই ওই বিধায়কের উদ্যোগে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি হিসাবে বুধবার বাসুদেবপুর থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত তৃণমূল কর্মীদের একটি বিশাল বাইক মিছিল অনুষ্ঠিত হল। যে বিধায়ক সকলকে হেলমেট পড়ে বাইক চালানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন আজ তাঁর উপস্থিতিতেই নিজের দলের বেশিরভাগ কর্মীরা বিনা বাধায় মাথায় হেলমেট ছাড়া দাপিয়ে বাইক র্যালি করল। আর নীরবে তা দেখল জেলা পুলিশ প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, সামশেরগঞ্জে বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য তথা জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান ঘনিষ্ঠ আনারুল হক বিপ্লবের দীর্ঘদিন ধরেই 'ঠান্ডা লড়াই' চলছে। কিছুদিন আগে খলিলুর রহমানকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য আনারুল হক সামশেরগঞ্জ থেকে রঘুনাথগঞ্জ শহর পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বাইকের একটি র্যালি করেছিলেন। সেখানেও বেশিরভাগ তৃণমূল কর্মীর মাথাতেই হেলমেট ছিল না। তৃণমূল সূত্রের খবর, সামশেরগঞ্জে নিজের শক্তি প্রদর্শন করার জন্য আজ পাল্টা বাইক র্যালি করেছেন তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম।
জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, " মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের 'সেফ ড্রাইভ ,সেভ লাইফ' প্রকল্পের মধ্য দিয়ে আমরা প্রায়ই পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে থাকি। সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে গোটা দেশে অপরাধের ঘটনাতে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার থেকে অনেক বেশি মানুষ পথ দুর্ঘটনাতে মারা যান। তার মধ্যে একটি বড় সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর কারণ হেলমেট না পড়ে মোটরসাইকেল চালান।" তিনি বলেন,"কোনও রাজনৈতিক দলের বিপুল সংখ্যক কর্মী হেলমেট না পড়ে র্যালি করলে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। সেই কারণে অনেক সময় সব কিছু দেখেও আমাদেরকে চুপ করে থাকতে হয়।"
গোটা বিষয়টি নিয়ে সামশেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বলেন,"২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভার অঙ্গ হিসেবে আজকের বাইক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই র্যালিতে প্রায় পাঁচ হাজার বাইক অংশগ্রহণ করেছিল।" তিনি দাবি করেন," আমাদের র্যালিতে দলের যে সমস্ত কর্মীরা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের সবাইকেই আমি হেলমেট পড়ে অংশগ্রহণ করতে বলেছিলাম। কিন্তু কিছু পথচলতি বাইক আরোহী বিনা হেলমেটে মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের র্যালিতে ঢুকে গিয়েছিল।