বিজেপির জেলা সভাপতি সহ একাধিক নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা পুলিসের
বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাট-১ ব্লক অফিসে ডেপুটেশন দিতে এসে দাদাগিরি ও পুলিস অফিসারকে আঙুল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। এবার সেই অভিযোগে বিজেপির জেলা সভাপতি সহ একাধিক নেতা-নেত্রীর নামে জামিন অযোগ্য ধরায় মামলা দায়ের হল রামপুরহাট থানায়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের জামিন অযোগ্য ১৩২, ২২৩, ২২৪, ৩৫/১ ও আইপিসি ৩৫৩ ধারায় মামলা করা হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে খবর। যদিও এই মামলা কী করে টেকে সেটা দেখতে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা।
পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্তরা সরকারি কর্মচারীকে তাঁর দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার জন্য আক্রমণ বা অপরাধমূলক বল প্রয়োগ করেছেন। সরকারি কার্যালয়ে ঢুকে তাঁরা ভায়োলেন্স করেছেন। পুলিস অফিসারকে হুমকি ও চুড়ান্ত অপমান করেছেন। অভিযোগকারী সাব ইন্সপেক্টর উত্তম কুমার পালের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু হয়েছে। এফআইআরে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা, জেলা সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল, জেলা কমিটির সদস্য নীলকন্ঠ বিশ্বাস, রামপুরহাট শহর সভাপতি সুরজিৎ সরকার, মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী রশ্মি দে সহ আরও ১০-১৫ জন ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সেজন্য অভিযুক্তদের কাছে নোটিস পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
যদিও এব্যাপারে ধ্রুব সাহা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, খড়িডাঙা গ্রামে তৃণমূল পানীয় জল বন্ধ রেখেছে। সেজন্য আমরা ওই গ্রামে জলের ব্যবস্থার দাবিতে ব্লক অফিসে ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিলেন।
কিন্তু ওখানে পুলিস অফিসার দুর্ব্যবহার করেছেন। তার প্রতিবাদ করায় পুলিস বিভিন্ন ধারায় কেস দিয়েছে। এসটি সমাজের হয়ে মুখ খোলায় তৃণমূল সরকারের প্রশাসন কেস দিচ্ছে এবং একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে। তিনি বলেন, এই ঘটনার ধিক্কার জানাচ্ছি এবং এর শেষ দেখে ছাড়ব। এই কেস নিয়ে হাইকোর্টে যাব। কীভাবে এই মামলা টেকে সেটা দেখব।
যদিও তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, উনি সরকারি কার্যালয়ে ঢুকে সরকারি কর্মীকে অসংসদীয় কথাবার্তা না বলে যদি আইনের মাধ্যমে যেতেন, ভালো করতেন। উনি তো সেটা করেননি। উনি কিছু মানুষকে উস্কে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করবেন। সরকারি কর্মীকে হুমকি দেবেন, ধমকাবেন, চমকাবেন আর পুলিস-প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসে থাকবে সেটা ভাবলে তো চলবে না। আইন আইনের পথে চলবে।
উল্লেখ্য, রামপুরহাট-১ ব্লকের নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িডাঙা গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা চলছে। অভিযোগে, লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে ওই গ্রামে তৃণমূল জিতলেও আশানুরূপ ফল না হওয়ায় পানীয় জল পরিষেবা থেকে গ্রামবাসীদের বঞ্চিত করে রেখেছে তৃণমূল। এরই প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে কয়েকজন গ্রামবাসী ও দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে ব্লক অফিসে বিক্ষোভ, ডেপুটেশন দিতে আসেন ধ্রুব সাহা। যদিও অফিসে বিডিও ছিলেন না।
বিডিওর কক্ষে ডেপুটেশন গ্রহণ করবেন বলে জানান জয়েন্ট বিডিও। সেই মতো বিজেপি নেতারা বিডিওর কক্ষে ঢুকতে গেলে সাব ইন্সপেক্টর উত্তমকুমার পাল বলেন, দু’জনের বেশি যাবেন না। দু’মিনিটে কথা বলে বেরিয়ে আসবেন। তা শুনেই ওই অফিসারকে দালাল, চামচা বলে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনার পাশাপাশি চূড়ান্ত অপমান করেন ধ্রুব সাহা সহ অন্যান্যরা।