সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে বৈঠকে মুখ্যসচিব, মূল্যবৃদ্ধি রোধে পথে ডিএম-এসপিরাও
প্রতিদিন | ১৭ জুলাই ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার: মুখ্যমন্ত্রী দাম কমানোর জন্য দশ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই মঙ্গলবার নবান্নে বৈঠক করে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের রাস্তায় নেমে দাম নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা। এই কদিনে দাম কতটা কমেছে, পুলিশ, পুরসভা, টাস্ক ফোর্সের যৌথ অভিযান ঠিকমতো হচ্ছে কি না, বাজারে সবজির জোগান বেড়েছে কি না, সব নিয়েই এদিন খুঁটিয়ে, খুঁটিয়ে রিপোর্ট নেন মুখ্যসচিব। ডিএম-এসপিদের প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে বাজারে বাজারে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সবজির দাম যাতে কোনওভাবেই আর না বাড়তে পারে সেদিকে নজর দিতে বলেন। জানান, পাইকারি বিক্রেতারা সবজি, আলু, পিঁয়াজ বেআইনিভাবে মজুত রাখছেন কি না, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
পাশাপাশি, সুফল বাংলার স্টল বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে পাড়ায় পাড়ায় একটা করে স্টল খুলতে বলেছেন। এই কাজে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যুক্ত করতে বলা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের অফিসারদের আচমকা অভিযান আরও বাড়াতে বলেন।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রুখতে সম্প্রতি নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আনাজ-সবজির দাম কমানোর জন্য দশ দিনের সময়সীমাও বেঁধে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুরসভার সঙ্গে যৌথ অভিযান শুরু করে পুলিশ। এদিন নবান্নে বৈঠক সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের সচিব, পুলিশ কর্তা, ডিএম-এসপিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব। পরে রাজ্যের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা বলেন, “পুরসভার সঙ্গে যৌথভাবে আমরা বাজারগুলিতে অভিযান চালাচ্ছি। আজ মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক ছিল। দাম কমছে।”
এদিন প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মুখ্যসচিব বাজারদর নিয়ন্ত্রণে বৈঠক করেন। জানা গিয়েছে, দুএকটি জেলায় সবজির বাজারদর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও একাধিক জেলায় দাম লাগামছাড়া। কোথাও সবজির জোগান কম। প্রতিটি জেলায় তাই টাস্ক ফোর্সের অভিযান আরও বাড়ানোর নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। শুধু তাই নয়, সবজির জোগান ঠিক থাকছে না কি সেটাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে টাস্ক ফোর্সকে। মুখ্যমন্ত্রী হিমঘরে মজুত আলু ও গোলাঘরে মজুত পিঁয়াজ বাজারে এনে দ্রুত দাম কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এদিন সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে বাজারে আলু, পিঁয়াজের জোগান বাড়ানোর নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কৃত্রিম ঘাটতি তৈরি করে একদল অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুতদার কালোবাজারির মাধ্যমে দাম বাড়াচ্ছে। এই ব্যাপারেও পুলিশ, প্রশাসনকে সতর্ক করেন মুখ্যসচিব। সীমান্ত এলাকায় নাকা চেকিং বাড়ানোর নির্দেশ দেন। জানান, কোথাও কেউ অকারণে সবজি মজুত করে রাখলে পুলিশকে পদক্ষেপ করতে হবে।
এই মুহূর্তে আলুর দাম ৩৫ টাকা থেকে কমে বত্রিশ টাকায় এসেছে। পিঁয়াজের দামও বেশ কয়েকটি বাজারে কমেছে। অল্প হলেও কমেছে ঝিঙে, পটল, করলার দাম। এমন তথ্য জানিয়ে টাস্ক ফোর্সের এক সদস্যের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পর থেকে এই মুহূর্তে কাঁচা সবজি থেকে ফল, মাছ সবকিছুর দাম ৩০-৪০ শতাংশ কমেছে। তবুও এখনও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মুনাফার জন্য বেশি দামে বিক্রি করছে। টাস্ক ফোর্সের নজরে সবটা আছে।’’