মহরমে হুগলি ইমামবাড়ায় উপচে পড়া ভিড়, দেখা গেল সম্প্রীতির ছবি...
আজকাল | ১৮ জুলাই ২০২৪
মিল্টন সেন, হুগলি: সাড়ম্বরে মহরম পালিত হয় হুগলি ইমামবাড়ায়। দশদিন ধরে চলে মেলা। বুধবার ছিল ইসলামিক হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রথম মাস মহরমের দশম দিন। ইসলাম ধর্মের মূলত সিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ এই তাজিয়া নিয়ে শোকযাত্রা করে। সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষ রোজা বা উপবাস ওয়ার এই দিন পালন করে থাকেন। বলা হয় মহরমের দশম দিনে কারবালার প্রান্তরে ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হজরত মোহাম্মদের নাতি ইমাম হোসেন ও তার পরিবার শহিদ হয়েছিলেন। ইসমাল ধর্মের জন্য মানবিকতা এবং ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে শহিদ হন ইমাম হোসেন সহ ৭২ জন। তাই প্রত্যেক বছর এই দিনে শহিদের স্মৃতিতে তাজিয়া বের করে কারবালায় নিয়ে গিয়ে মাটি দেওয়া হয়। সেই রীতিকে বলে আশুরা। এদিন শোকার্ত থাকেন ইসলাম ধর্মের মানুষ। হুগলি ইমামবাড়ায় বিভিন্ন জায়গা থেকে তাজিয়া আসে, তারপর শোকযাত্রা কারবালায় যায়।
এই মহরমে হিন্দুরাও সামিল হন। তবে মহরমকে ঘিরে প্রত্যেক বছরই ইমামবাড়া এবং সংলগ্ন চত্বরে সম্প্রীতির অনন্য ছবি দেখা যায়। এদিন মহরমের তাজিয়া যাওয়ার রাস্তা ধুয়ে পরিষ্কার করে দিতে দেখা যায় সুনীল রজককে। একইসঙ্গে তিনি তৃষ্ণার্তদের সরবত খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করেন। হুগলি ইমামবাড়া থেকে তাজিয়া বেরিয়ে যায় কারবালা পর্যন্ত। ইমামবাড়া থেকে চকবাজার, পাঙ্খাটুলি হয়ে কারবালায় যাওয়ার পথে চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কাছে নিজের বাড়ির সামনে জলছত্র করেন সুনীল রজক। সুনীল ধর্মে হিন্দু হলেও মহরমের দিন সংখ্যালঘু ভাইদের হাতে জল সরবত তুলে দেন। প্রচন্ড রোদে তাজিয়া নিয়ে শোকযাত্রায় খালি পায়ে যারা হাঁটেন তাদের পিপাসা মেটান সুনীল। তাজিয়া পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করা আট থেকে আশি নারী পুরুষ অনেকেই সুনীলের জলছত্রে গলা ভিজিয়ে নেন। তারা জানান এটাই হল সম্প্রীতি, ইমামবাড়ার মহরমে যা বার বার দেখা যায়।