টানা বৃষ্টি-ধসে বিপর্যস্ত পাহাড়, বন্ধ বিক্রিবাটা, প্রতিদিন কোটি টাকার ক্ষতি উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের
প্রতিদিন | ১৮ জুলাই ২০২৪
অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: একটানা বৃষ্টিতে ধসে জেরবার গোটা পাহাড়। আর তাতেই শিলিগুড়ির অর্থনীতিতে ব্যাপক ধাক্কা। শহরের কোনও মার্কেটে বিক্রি-বাট্টা নেই। গোটা শহরে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। এখন তার ৩০ শতাংশ ব্যবসা হচ্ছে। অবস্থা এতটাই খারাপ যে বেশকিছু দোকানদার দোকান খুলেও বিক্রি না করে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। তাই পাহাড়ের রাস্তা কবে ঠিক হবে আর যান চলাচল আগের মত স্বাভাবিক হবে সেদিকেই তাকিয়ে গোটা শিলিগুড়ির ব্যবসায়ী মহল।
সমতলের বাজার মূলত পাহাড়ের দিকেই তাকিয়ে থাকে। কারণ প্রতিদিন দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং, মিরিক-সহ পাশের রাজ্য সিকিম থেকে প্রচুর ক্রেতা আসেন বাজার করতে। সকাল থেকে তাদের আনাগোনা শুরু হয় বিকেল হতেই তারা আবার পাহাড় চলে যায়। কিন্তু গত কয়েকদিনের একনাগাড়ে বৃষ্টিতে পাহাড়ের বিভিন্ন রাস্তায় ধস নেমেছে। তাই কেউ পাহাড় থেকে আসছে না। রাস্তা ঠিক হলেও ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। শিলিগুড়ির প্রতিটি মার্কেট পাহাড়ের ক্রেতাদের উপর ভরসা করে থাকে। তবে সবথেকে বেশি ভিড় হয় বিধান মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে। এই মার্কেটগুলো ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বিধান ও শেঠ শ্রীলাল দুটো মার্কেট মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়ে থাকে। কিন্তু এখন মাত্র ৩০ শতাংশ ব্যবসা হচ্ছে। দোকানীরা এসে দিনভর বসে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, “খুব শোচনীয় অবস্থা আমাদের। পাহাড় থেকে ক্রেতারা না এলে আমাদের বাজারের হাল খারাপ হয়ে যায়। প্রচুর দোকানদার দিনভর কিছু বিক্রি না করেই চলে যাচ্ছে। জানিনা কবে এই অবস্থা ঠিক হবে।” একইভাবে শেঠ শ্রীলাল মার্কেটেও একই হাল। এই মার্কেটের সম্পাদক খোকন ভট্টাচার্য বলেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কাছে আমরা প্রত্যেকে অসহায়। তাই পাহাড়ের রাস্তা পুরোপুরি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ব্যবসা আর জমবে না। আমরা এখন বিশাল ক্ষতির মুখে পড়ে রয়েছি।” তবে শুধু এই মার্কেট নয় পাহাড়ের ধসের প্রভাব পড়েছে শিলিগুড়ির মুখ্য নিয়ন্ত্রিত বাজারেও।।এখানেও প্রতিদিন সবজি, ফল, মাছ কিনতে আসে পাহাড়ের ক্রেতারা। কিন্তু এখানেও তাদের দেখা নেই। তাই সবজি নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। বিশাল ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। মাছ বাজারের সম্পাদক বাপি চৌধুরী বলেন, “ক্ষতি তো অবশ্যই। পাহাড়ের ক্রেতারা না এলে বিক্রি হবে কী করে! ওরা এসে মাছ-সহ কাঁচামাল নিয়ে যায়। তাই মার্কেটে শুধু মাছ নয় বাকি মালপত্রেরও বিক্রি নেই।”