• আর্থিক দুর্নীতির রিপোর্ট খামবন্দি
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • সুখেন্দু পাল, বর্ধমান: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ কোটি ৯৩লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠার পরই তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। সেই কমিটি খামবন্দি রিপোর্ট জমা করেছে কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু ইসির বৈঠক না ডাকায় সেই খাম খোলা যায়নি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্র বলেন, ২০২২সালের আগস্ট মাস থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা তছরুপ হয়েছে। সেইসময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। বিষয়টি তদন্ত করতে মজবুত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। 


    এছাড়া একটি স্পেশাল অডিট কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কী রিপোর্ট উঠে এসেছে তা ইসির মিটিংয়ে জানানো দরকার। কিন্তু সেটাই করতে দেওয়া হচ্ছে না। 


    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই রিপোর্ট খামবন্দি হয়ে উপাচার্যের অফিসে পড়ে রয়েছে। আধিকারিকদের দাবি, সেই রিপোর্ট ইসির বৈঠকে প্রকাশ করাই নিয়ম। কয়েকদিন আগেই সেই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু একাংশের বাধায় তা বাতিল হয়ে যায়। তাদের দাবি, স্থায়ী উপাচার্য ছাড়া ইসির বৈঠক ডাকা যায় না।


    বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সই জাল করে বিশ্ব঩বিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নেওয়া হয়। পুলিস ওই ঘটনার তদন্তে সুব্রত দাস নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। তার অ্যাকাউন্টেই বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা ট্রান্সফার করা হয়। পরে সেই টাকা আরও কয়েকটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল। প্রতারণার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন কর্মীও গ্রেপ্তার হয়েছিল। অর্থদপ্তরের এক কর্মীর নামও এই দুর্নীতিতে জড়িয়েছিল। পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, আধিকারিকদের সই জাল করেই এই দুর্নীতি করা হয়েছিল। পুলিস এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। পরে তদন্তভার নেয় সিআইডি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও ময়দানে নামে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে কয়েক মাস আগে কমিটি গঠন করা হয়। তাঁরা বিস্তারিত রিপোর্ট জমা করেছেন। 


    এক আধিকারিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত রিপোর্ট সামনে আসা দরকার। তা না হলে অনেককিছুই ধামাচাপা পড়ে যাবে। তদন্ত রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকের জানার অধিকার রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো সেই ফাইলে ধুলোর আস্তরণ জমে যাবে। প্রতারক চক্রের টাকা তছরুপের পিছনে কারও উদাসীনতা ছিল কিনা সেটাও সামনে আসা দরকার। বেশ কয়েক মাস ধরে ধাপে ধাপে ওই টাকা তোলা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন তৎকালীন কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। আধিকারিকদের দাবি, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। এত বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা অত্যন্ত জরুরি। সেটা হলেই বহু সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসির বৈঠক বহুদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে। তার ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আটকে রয়েছে। বিশেষ করে আর্থিক বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ নিতে পারছে না। এছাড়া অনেকের প্রমোশনও আটকে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা তছরুপের রিপোর্টও খামের বাইরে আনা দরকার।-ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)