সংবাদদাতা, কাটোয়া: বৃক্ষরোপণের প্রবণতা বাড়ছে। বর্ষার মরশুম শুরু হতেই কাটোয়া পূর্বস্থলীর নার্সারিগুলি থেকে গাছের চারা বিক্রি বাড়ছে। ভিড় জমছে প্রচুর ক্রেতার। মেহগনি থেকে শিশু, নানারকম ফলের গাছের চারা কিনতে নার্সারিগুলিতে ভিড় জমাচ্ছেন তাঁরা। পূর্বস্থলীর নার্সারিগুলি থেকে চারাগাছ ট্রাকে করে পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যেও।
গাছের সংখ্যা কমছে। রাস্তার ধারেও কাটা হয়েছে গাছ। তাই অনেকেই বনসৃজনের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। কাটোয়ার পানুহাটে বেশ কয়েকটি নার্সারি রয়েছে। সেখান থেকেও গাছের চারা সংগ্রহে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। পানুহাটের এক নার্সারি কর্মী দেবজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, এখন বর্ষার মরশুমে শাল, সেগুন, মেহগনির চারা বিক্রি বাড়ছে। তাই আমরা বর্ষার মরশুমের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি। ভালোই বিক্রি হচ্ছে গাছের চারা। পূর্বস্থলীজুড়ে প্রচুর নার্সারি রয়েছে। নার্সারি শিল্পে পূর্বস্থলী জেলায় একটা বড় জায়গা করে নিয়েছে। নার্সারি শিল্পের উপর পূর্বস্থলীর প্রচুর মানুষ নির্ভরশীল। নার্সারিতে চারা গাছ তৈরি থেকে শুরু করে তার পরিচর্যা করা এমনকী সেই চারা গাছ নিয়ে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করা এসবের সঙ্গে বহু মানুষ যুক্ত রয়েছেন। এসব করেই অনেকের সংসার চলে। বর্ষার মরশুমেও পূর্বস্থলীজুড়ে নানা গাছের চারা ব্যাপক বিক্রি হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড, বিহার, অসমে ট্রাক ভর্তি করে এখানকার গাছের চারা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পূর্বস্থলী এলাকার পলাশপুলি, বেলগাছি, শিবতলা, ফলেয়া, পারুলিয়া, চুপি প্রভৃতি এলাকার কয়েক হাজার বিঘা জমিতে নানা গাছের চারা তৈরি করেন চাষিরা। দেশ বিদেশের নানা চারাগাছ এখানে তৈরি করা হয়। আর সেই চারাগাছ নিয়ে হকাররা বাজারে বিক্রি করেন। প্রায় আড়াই হাজার মানুষ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এক নার্সারি মালিক বলেন, মূলত শীতকাল ও বর্ষাকালে গাছের চারা বেশি বিক্রি হয়। এখন চারা বিক্রি বেড়েছে।
অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে অরণ্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে এবার সাড়ে পাঁচ লক্ষ গাছের চারা বিলি করার লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। কাটোয়া, আউশগ্রাম, গুসকরা সর্বত্রই গাছের চারা বিলি করছে বনদপ্তর। একজনকে সর্বাধিক পাঁচটি করে গাছের চারা দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। কাটোয়ার রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা বলেন, আমাদের রেঞ্জ অফিস থেকে প্রচুর মানুষ এসে চারা সংগ্রহ করছেন। এটা দেখেও ভালো লাগছে। পাশাপাশি গুসকরা রেঞ্জের অধীনে এবার ২৫ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার বনসৃজনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে৷ এখনও পর্যন্ত ১৮০০ গাছের চারা বিলি করা হয়েছে বলে জানান গুসকরা রেঞ্জের রেঞ্জার সমীরণ মুখোপাধ্যায়। -নিজস্ব চিত্র