• ৭৫ বছর বয়সে ড্রাগন ফলের চাষ করে কৃষকদের বিকল্প আয়ের পথ দেখাচ্ছেন কেতুগ্রামের উদয়ন
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: বৃদ্ধ বয়সে অবসর নেননি।  পঁচাত্তর বছর বয়সে জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করে বিকল্প আয়ের সন্ধান দেখাচ্ছেন কেতুগ্রামের বৃদ্ধ উদয়ন ঘোষ। রীতিমতো কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ করে আয় করছেন ওই বৃদ্ধ। এমনকী গ্রামে ‘কৃষি ক্লাব’ গড়ে অন্যান্য চাষিদের চাষাবাদ নিয়ে সুপরামর্শ দিচ্ছেন ওই বৃদ্ধ। জৈব পদ্ধতিতে চাষ করে কেমন করে সুনিশ্চিত আয় করা যায় তার দিশা দেখান তিনি। কেতুগ্রামের পালিটা গ্রামে কৃষি ক্লাবে নতুন বিকল্প চাষের পরামর্শ নিতে ছোটেন অনেকেই। 


    কেতুগ্রাম-১ ব্লকের পালিটা গ্রামের বাসিন্দা উদয়নবাবু বৃদ্ধ বয়সেও চাষাবাদে নতুন বিকল্পের সন্ধান দেন। বৃদ্ধ বয়সেই জমিতে গিয়ে সবার সঙ্গে ড্রাগন ফলিয়ে বাজারে বিক্রি করেন তা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। শুধু কি তাই, এই বয়সে সুধা পদ্ধতিতে ধান, সব্জি, গম চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর চাষের প্রতি নেশা দেখে নাবার্ড এর সহযোগিতায় গ্রামে কৃষি প্রগতি ক্লাব গড়েন তিনি। সেখানে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁদের ক্লাবে নিয়মিত কৃষি নিয়ে আলোচনা করেন। এলাকার বাসিন্দাদের কিভাবে চাষে সাফল্য আসে তার পরামর্শ দেন। অনেককে তিনি চারা দিয়ে সহযোগিতাও করেন। উদয়নবাবু বলেন, কাটিং পদ্ধতিতে তিন বছর ধরে আমি ড্রাগন ফ্রুট চাষ করেছি। কৃষি ক্লাবে সবাই আসেন। সেখানে চাষাবাদ নিয়েই আলোচনা হয়। এটা আমার ভালো লাগে। 


    উদয়নবাবু তাঁর কয়েক কাঠা জায়গায় কাটিং পদ্ধতির মাধ্যমে ড্রাগন ফ্রুটের চাষ করেছেন। তিন বছর ধরে সেখান থেকে ফল বিক্রি করে আয় করেন তিনি। ড্রাগন গাছটি ক্যাকটাস জাতীয়। একটি গাছ থেকে ফল উৎপাদন হবে প্রায় ১২ বছর ধরে। এই সময় জমির ফাঁকা জায়গায় অন্য চাষও করতে পারবেন চাষিরা। প্রথম বার ৬-৭ টি করে ফল ধরেছে গাছে। পরবর্তী সময়ে ৫০টি পর্যন্ত ফল একটি গাছে ধরাতে পারে। এক একটি ফলের ওজন হবে ১৫০ থেকে দু’শ গ্রাম। বাজারে অন্তত প্রতি কেজিতে ২০০টাকা দরে ড্রাগন ফল বিক্রি হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই চাষ থেকে চাষিরা ভালো লাভ করতে পারবেন। পালিটা গ্রামে উদয়নবাবুর ড্রাগন ফলের চাষ দেখে অনেকেই তাঁর কাছ থেকে চারা নিয়ে যান। তবে তার জন্য পঞ্চাশ টাকা দিতে হবে তাঁকে। সেই চারা বড় করতে পারলে তবেই ফের ওই পঞ্চাশ টাকা ফেরত পাবেন। চারা নিয়ে গিয়ে কেউ যাতে নষ্ট না করেন তারজন্যই এমন ব্যবস্থা। কৃষি বিশেষজ্ঞদের দাবি, ক্যালোরি কম থাকায় এই ফল শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। এছাড়াও ভিটামিন সি সহ একাধিক পুষ্টিগুণ আছে এর মধ্যে। তাই বাজারে এর চাহিদাও ব্যাপক।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)