• হলদিয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের বাড়িতে ফুল ও মশারি নিয়ে হাজির এসডিও
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: পুর এলাকায় ডেঙ্গু রোগীদের সুস্থতা কামনা করতে ফুলের তোড়া, ফলের ঝুড়ি নিয়ে বুধবার সটান তাঁদের বাড়ি পৌঁছলেন  হলদিয়ার মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি হলদিয়া পুরসভার প্রশাসক হওয়ায় ব্যস্ত থাকেন। তাই মহরমের ছুটির দিনটিকে ডেঙ্গু রোগীদের বাড়ি যাওয়ার জন্য বেছে নেন। এদিকে বাড়ির দরজায় হঠাৎ মহকুমা শাসককে দেখে হকচকিয়ে যান ডেঙ্গু আক্রান্তের পরিবারের লোকজন। কীভাবে মহকুমা শাসককে আপ্যায়ন করবেন, ভেবে উঠতে পারছিলেন না অনেকেই। মহকুমা শাসক তাঁদের পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করায় দারুণ খুশি সবাই। শুধু ফল, মিষ্টি, ফুল নয়, মশারি উপহার দিয়ে ডেঙ্গু সচেতনতার বিশেষ বার্তাও দেন পুর প্রশাসক। হলদিয়া পুর এলাকায় এখন পর্যন্ত সাতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে সিংহভাগই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সবশেষে মঙ্গলবারই ওই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন এক নার্সিং পড়ুয়া ছাত্রী। বছর বাইশের ওই ছাত্রী বেঙ্গালুরুতে নার্সিং পড়তেন। সেখানে জ্বরের পর ডেঙ্গু ধরা পড়তেই তড়িঘড়ি প্লেনে চেপে হলদিয়ায় বাড়ি ফেরেন। হলদিয়ার বি সি রায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।


    এদিন পুরসভার ডেঙ্গু আক্রান্তের তালিকা ধরেই প্রথমে এসডিও যান হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তারের কাছে ওই ডেঙ্গু আক্রান্ত ছাত্রীর বিষয়ে খোঁজ নেন। ছাত্রীর সাড়ে তিন লক্ষের বেশি প্লেটলেট রয়েছে এবং জ্বরও তেমন নেই। এরপর আর এক পঁচাত্তর বছরের আক্রান্ত বৃদ্ধার খোঁজ নেন এসডিও। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা তমলুক হাসপাতালে ভর্তি। হাসপাতালের রোগীদের খোঁজ নেওয়ার পর এসডিও ১৯, ২২ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভবানীপুর, ব্রজনাথচক ও ক্ষুদিরাম নগরের হৈমন্তী ব্লকে তিন ডেঙ্গু আক্রান্তের বাড়ি পৌঁছন। তাঁরা প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন বাড়িতে চিকিৎসা করে। হাসপাতাল সেরে বেলা ১১টা নাগাদ ভবানীপুরে পৌঁছন এসডিও। ওই বাড়ির লোকজন রীতিমতো অবাক। বাড়িতে ঢুকেই যিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁর দিকে এগিয়ে যান এসডিও। প্রথমে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। তারপর তুলে দেন আপেল, বেদানা, আঙুর, খেজুর, লেবু সহ বড় একটি বেতের ঝুড়ি। শেষে দেন সুন্দর একটি মশারি। ৬টি বাড়ি ভিজিটের পর ওই বাড়িগুলি আশপাশ ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে কারও জ্বর হয়েছে কি না খোঁজও নেন। প্রতিটি ওয়ার্ডেই ডেঙ্গু কর্মীরা কেমন কাজ করছেন, কোনও সমস্যা আছে কি না, জানতে চান এসডিও।


    পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হলদিয়ায় গত এপ্রিল মাস থেকে জুলাই পর্যন্ত ৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে নজরদারির কারণে হলদিয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ কম বলে দাবি পুরসভার। রাজ্যের তরফেও হলদিয়ার ডেঙ্গু নজরদারি নিয়ে প্রশংসা করা হয়েছে। পুর প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু সচেতনতায় পুরসভার ৬০০ জনের বেশি ডেঙ্গু কর্মী ২৯টি ওয়ার্ডে কাজ করছেন। কোনও ওয়ার্ডে ৫-৬ জনের বেশি একসঙ্গে ডেঙ্গু ধরা পড়লেই ফিভার ক্লিনিক করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। সবাই চাঙ্গা করতে এবং মানুষকে সচেতনতার বার্তা দিতেই ছুটির দিনটি কাজে লাগালাম। 


    এদিন সাইকেল ট্র্যাক নিয়ে পুরসভা ও এইচডিএ যৌথ ভিজিট করেছে এইচপিএল লিঙ্ক রোডে। ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম (এনক্যাপ) কর্মসূচির প্রায় ৪ কোটি টাকায় দু’ লেনের ওই ট্র্যাক তৈরি হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)