• চাষের স্বার্থে অন্তত ১৫ দিন জল দেওয়া হোক, আর্জি রাজ্যের
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বর্ষার এমন রূপ দক্ষিণবঙ্গের চাষিরা বহু বছর দেখেননি। মাঠে গিয়ে তাঁরা ঠাহর করতে পারছেন না এটা শ্রাবণ মাস নাকি জৈষ্ঠ্যর দুপুর। মাঠে গোরু চরছে, হাতে কাজ নেই। অথচ অন্যান্য বছর এইসময় নাওয়া খাওয়ার সময় থাকত না। মাঠেই সকাল থেকে সন্ধ্যা কেটে যেত। এবার জলের অভাবে চাষ সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ২৩ জুলাই ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসছে রাজ্য সরকার। দুই বর্ধমান, হাওড়া, হুগলির জেলা আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে হাজির থাকবেন। প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ১৫ দিন জল দেওয়ার আবেদন জানানো হবে।


    এক আধিকারিক বলেন, জল বেশি হলে ডিভিসি তা ছেড়ে দেয়। বহু জমি তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবছর রাজ্যে বৃষ্টি কম হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জল ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। চাষিরা ধান রোপণ করে নিতে পারলে আর তেমন জলের দরকার হবে না। ততদিনে বৃষ্টি নামবে বলে আশা করা যায়। ১৫ দিন জল না দিলে সব জায়গায় পৌঁছবে না। অনেক সময় দেখা যায় কয়েকদিন জল ছাড়া হলে কিছু এলাকার বাসিন্দারা ক্যানেলে বাঁধ দিয়ে তা তুলে নেন। কিছু এলাকায় জল পৌঁছয় না। চাষিরা সমস্যায় পড়েন। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, বৈঠকে ডিভিসির আধিকারিকরা হাজির থাকবেন। জলাধারে কত জল রয়েছে, কত দিতে পারবে তা তাঁরা সেদিন জানিয়ে দেবেন। তবে আমরা ১৫ দিন জল দেওয়ার দাবি জানাব। 


    পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলাতেই প্রায় ৫০ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হলেও তা কাজে লাগছে না। বর্ষার চাষ বৃষ্টির জলের উপর নির্ভর করে। সব জায়গায় সাবমার্সিবল নেই। সেই এলাকাগুলিতে বৃষ্টি না হলে চাষ ধাক্কা খাবে। ডিভিসি পর্যাপ্ত জল দিলে দুই বর্ধমান, হুগলি এবং হাওড়ার বড় অংশের চাষিরা উপকৃত হবেন। গতবছর থেকে বিভিন্ন এলাকায় ক্যানেল সংস্কার করা হয়েছে। তাই সব জায়গায় জল পৌঁছনো নিয়ে তেমন সমস্যা হবে না। 


    পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডল বলেন, আশা করা যায় চলতি মাসের শেষের দিকেই ডিভিসি প্রথম ধাপে জল দেবে। সেইমতো প্রাথমিক কথা হয়েছে। আর এক আধিকারিক বলেন, ঝাড়খণ্ডের বৃষ্টির উপর ডিভিসি নির্ভর করে থাকে। সেরাজ্যে ভারী বৃষ্টি হলে জলের অভাব হয় না। কিন্তু সেরাজ্যে এখনও পর্যন্ত সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। প্রথম ধাপে কতটা জল দেওয়া যাবে তা আলোচনা করার পরই ঠিক হয়। পানীয়ের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জল মজুত রাখতে হয়। তা না হলে বহু এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দেবে। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)