• সব্জির দাম যাচাইয়ে বাজারে ডিএম
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, মালদহ: সব্জির দাম যাচাই করতে এবার সটান বাজারে থলে হাতে হাজির হলেন মালদহের জেলাশাসক। বুধবার সাত সকালে ইংলিশবাজার শহরের মকদুমপুর এলাকার ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র পুর বাজারে হানা দেন জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া। বাজার যে অগ্নিমূল্য তা সব্জিতে হাত দিয়েই জেলাশাসক টের পান। মাত্রাতিরিক্ত দামে খুচরো বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সব্জি ও আনাজ বিক্রির জন্য কয়েকজন ব্যবসায়ীকে কড়া ভাষায় জেলাশাসক সতর্ক করেন। খুচরো ব্যবসায়ীদের রসিদ সহ পাইকারি বাজার থেকে শাক-সব্জি, আনাজ কেনার নির্দেশও দেন তিনি। প্রশাসনের নির্দেশ না মানলে যে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে, এদিন তাও জেলাশাসক স্পষ্ট করেন। প্রতি কেজি আলুর দাম ২৮ টাকার বেশি যাতে কেউ না নেয়, তাও প্রশাসন দেখবে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। এদিনের অভিযানে জেলাশাসকের সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবাহুতি ইন্দ্র, উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক প্রমুখ। 


    অন্যদিকে, এদিন থেকেই জেলা জুড়ে সাতটি ভ্রাম্যমাণ স্টল সহ মোট ৪০টি আলু, পেঁয়াজ বিক্রয় কেন্দ্র চালু করেছে প্রশাসন। স্টলগুলি এদিন থেকেই যাতে চালু হয়ে যায় সেব্যাপারে জেলাশাসক নির্দেশ দিয়েছেন। 


    তিনদিন আগে ‘বর্তমান’ পত্রিকায় ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র পুর বাজারে লাগামছাড়া মূল্যে সব্জি ও আনাজ বিক্রির খবর প্রকাশিত হয়। চড়া দামে তা কিনতে সাধারণ মানুষ রীতিমতো নাজেহাল হচ্ছিলেন। খবর প্রকাশের পর জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। জেলাশাসক বলেন, ওই বাজারে লাগামছাড়া মূল্যে জিনিসপত্র বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। তাই এদিন অভিযান চালানো হয়েছে। 


    এদিন সকালে দলবল নিয়ে জেলাশাসক বাজারে হাজির হন। বাজারের বিভিন্ন দোকানে গিয়ে তিনি বিক্রেতাদের কাছে সব্জি, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুন সহ অন্যান্য আনাজের দাম জিজ্ঞাসা করেন। একই সঙ্গে ক্রেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। ন্যায্য মূল্যের থেকে লাগাম ছাড়া বেশি দামে সব্জি, আনাজ সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছে বলে জেলাশাসক বুঝতে পারেন। তা করা যাবে না বলে তখনই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন। অনেকেই পাইকারি বাজার থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে জিনিস কেনার অজুহাত দিচ্ছিলেন। তাঁদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাইকারি বাজার থেকে সব্জি, আনাজ কেনার সময় পাকা রসিদ বা বিল নিতে হবে। সেই রসিদে দাম উল্লেখ থাকবে। ফলে কোন স্তরে কালাবাজারি হচ্ছে তা সহজেই বোঝা যাবে। 


    দু’দিন আগেই মালদহের নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে প্রশাসনের দল হানা দেয়। সেখানে এক বিক্রেতা ১৮০ টাকা কেজি দরে আদা কিনে খুচরো বাজারে ৩০০ টাকায় বিক্রির কথা স্বীকার করেন। ফলে পাইকারি বাজারের অজুহাত খাড়া করা বিক্রেতারা বেশিরভাগ সময় সঠিক কথা বলছেন না বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। 


    অন্যদিকে, এদিন দুপুরে জেলা কালেক্টরেট চত্বরে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রির জন্য ভ্রাম্যমাণ স্টলেরও উদ্বোধন করেন জেলাশাসক। তাঁর সঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর সহ অন্যান্যরা ছিলেন। জেলাশাসক বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রির মূল্য নিয়ন্ত্রণে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আলু ও পেঁয়াজের চাহিদা সর্বাধিক। ফলে সাতটি ভ্রাম্যমাণ স্টল বিভিন্ন বাজার এলাকায় গিয়ে চলতি মূল্যের থেকে কেজি প্রতি তিন-চার টাকা কম দামে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি করবে। এছাড়াও থাকছে ৩৩টি এলাকা ভিত্তিক স্টল। বিভিন্ন কৃষি সমবায়, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই স্টলগুলি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে।
  • Link to this news (বর্তমান)