• মণীশ শুক্লাকে খুনের স্বীকারোক্তি সুবোধের, আসানসোল আদালতে জানাল সিআইডি
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: বিজেপি নেতা তথা টিটাগড় পুরসভার কাউন্সিলার মণীশ শুক্লার খুনের ঘটনায় যোগের কথা স্বীকার করেছে বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ ওরফে দিলীপ সিং। ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর রাতে টিটাগড় থানার সামনে আততায়ীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান মণীশ। চাঞ্চল্যকর এই খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল রাজনৈতিক আলোড়ন শুরু হয়েছিল। শুধু মণীশ খুনই নয়, একটি বিখ্যাত স্বর্ণ বিপণির পুরুলিয়ার শো-রুমে লুটপাট এবং বারাকপুরের ব্যবসায়ীকে হুমকি-ফোনের ঘটনায় যুক্ত থাকার কথাও মেনে নিয়েছে এই গ্যাংস্টার। বুধবার এই জুয়েল থিফকে আসানসোল আদালতে হাজির করিয়ে ‘ফরওয়ার্ডিং লেটারে’ এমনটাই দাবি করল তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। 


    বিজেপি নেতা মণীশ খুনের তদন্ত পর্বে জানা যায়, ৫৫ লক্ষ টাকার ‘সুপারি’ দেওয়া হয়েছিল সুবোধ সিংকে। বারাকপুরের এক রাজনৈতিক মাতব্বর ওই টাকা অন্য একজনের মাধ্যমে বিহারে সুবোধের মেয়ের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। তবে অভিযুক্তকে নতুন করে নিজেদের হেফাজতে চায়নি রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা। এই তিনটি ঘটনার উল্লেখ করে আদালতের কাছে তাদের আর্জি, অভিযুক্ত জামিন পেলে মামলাগুলি প্রভাবিত হতে পারে। রানিগঞ্জের ডাকাতির ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। সুবোধ সিংকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হোক। অন্যদিকে আবার আসানসোল দক্ষিণ থানা এদিন সুবোধকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানায়। সেই আবেদন অবশ্য খারিজ হয়েছে। দক্ষিণ থানার দাবি ছিল, আসানসোল সংশোধনাগারে সিআইডি অফিসারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগের তদন্তে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন।   


    আসানসোল আদালতের বিচারক অর্পিত ভট্টাচার্য রানিগঞ্জে ডাকাতির ঘটনায় সুবোধকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জানান, আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিস চাইলে তাদের মামলায় সুবোধ সিংকে সংশোধনাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। ফের পুলিস হেফাজত আটকাতে সুবোধের আইনজীবীরা যখন প্রাণপাত করছেন, আসানসোল আদালতের হাজতে তখন খোশ মেজাজে এই গ্যাংস্টার। চলছিল পছন্দের ‘লিট্টি-চোখা’ দিয়ে রসনা তৃপ্তি। এরপর হাজতেই অন্য বিবিধ মামলায় অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘গোল টেবিল’ বৈঠকে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সুবোধ। ওই বৈঠক নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন পুলিস ও কারা প্রশাসন। কারণ, সুবোধ সিংয়ের গ্যাংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কয়েকজন এখন আসানসোল জেলেই বন্দি। জেল থেকে নতুন ‘ক্রিমিনাল’ রিক্রুট করে গ্যাংয়ের বহর বাড়ানোই জুয়েল থিফের কাজ। এহেন গ্যাংস্টার সংশোধনাগারেই সাম্রাজ্য বানানোর চেষ্টা করবে না তো? প্রশ্ন রয়েছে পুলিস মহলেই। 


    যদিও এদিন সুবোধ আদালতে যাওয়ার পথে গোবেচারা ভেক ধরেছিল। সে বলে, ‘আপনারা আমাকে কী ভাবেন? আমাকে আর কত খারাপ করবেন? এরা (পুলিস) আমাকে নিয়ে টানাটানি করছে।’ তার আইনজীবী সোমনাথ চট্টোরাজ ও শেখর কুণ্ডু বলেন, ‘আমাদের বিরোধিতার কারণেই শোন অ্যারেস্টের আর্জি গৃহীত হয়নি।’ সুবোধকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩১ জুলাই ফের তাকে আসানসোল সিজেএম এজলাসে তোলা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)