• ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের জেরে আজ থেকে মুরগির মাংসের জোগানে টানের আশঙ্কা
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আজ বৃহস্পতিবার থেকে মুরগির মাংসের জোগানে টান পড়তে চলেছে রাজ্যজুড়ে। ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ট্রেডার্স অ্যা঩সোসিয়েশনের তরফে যে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, তার জেরেই মাংসের জোগানে সঙ্কট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা। সংগঠনের কর্তাদের দাবি, পোল্ট্রির গাড়িগুলির উপর যেভাবে পুলিসি অত্যাচার বেড়েছে, তার প্রতিবাদেই এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত।


    পোল্ট্রি ফার্মগুলিতে যে মুরগি উৎপাদন করা হয়, তা খোলা বাজারে নিয়ে আসেন ট্রেডাররা। রাজ্যে পোল্ট্রি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের আওতায় ৪,৫৫৭টি গাড়ি চলে। অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন থানা এলাকায় চলছে পুলিসি জুলুমবাজি। সংগঠনের আহ্বায়ক গণেশ বাগ বলেন, মাঝরাতে পোল্ট্রির গাড়ি দাঁড় করিয়ে, গাড়িপিছু ৫০০ টাকা জোর করে আদায় করা এখন রুটিনে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানা এলাকায় এমনই এক ঘটনায় গাড়ির খালাসি ১০০ টাকায় রফা করতে চাইলে, তাঁর উপর চড়াও হয় পুলিস। তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়। মারের চোটে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। 


    ঘটনার প্রতিবাদ করে ইতিমধ্যেই বেলদা থানা থেকে শুরু করে পুলিস সুপার, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিবহণ দপ্তর ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরে ই-মেল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন গণেশবাবু। 


    তিনি বলেন, গত ১২ জুলাই ঘটনাটি ঘটলেও, এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কারও তরফেই কোনও জবাবি ই-মেল আসেনি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আমাদের বক্তব্য, অকারণে এভাবে পুলিসের তরফে টাকা চাওয়ার জুলুমবাজি চলবে না। টাকা না দিতে পারলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি আটকে রাখা হয়। তাতে চরম ক্ষতি হয় ব্যবসার। কিন্তু এটাই এখন রুটিন হয়ে গিয়েছে। গণেশবাবুদের বক্তব্য, যতদিন না বিভাগীয় মন্ত্রী বা প্রশাসনের তরফে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, ততদিন তাঁরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।


    প্রসঙ্গত, রাজ্যে প্রতি সপ্তাহে প্রায় তিন কোটি কেজি মুরগি উৎপাদন হয় এবং রাজ্যে ২ কোটি ২০ লক্ষ কেজি চাহিদার জোগান দেওয়া হয়। বাকিটা জোগান দেওয়া হয় পাশ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে, এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। 


    ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের কর্তা মদনমোহন মাইতি বলেন, আমরা এই ধর্মঘটকে সমর্থন করি না এবং ধর্মঘটের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করি না। পুলিস যা করেছে, তা অন্যায়। তাই তার নিন্দাও করি আমরা। বিষয়টি দপ্তরের সচিব পর্যায়ে গিয়েছে এবং যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। পুলিসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। আমাদের বক্তব্য, সাধারণ ক্রেতাদের বিপদে ফেলে ধর্মঘট করা উচিত নয়। এই ব্যাপারে ক্রেতাদের তো কোনও অপরাধ নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)