একের পর এক নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির কারণেই বঞ্চনার শিকার বাংলা? তুঙ্গে জল্পনা
বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: বিধানসভা নির্বাচন। লোকসভা ভোট। বিধানসভা উপ নির্বাচন। বাংলায় কোনও নির্বাচনেই হালে পানি পায়নি বিজেপি। দিল্লি থেকে নেতারা এসে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সেই টার্গেটের থেকে বহু দুরে থমকে যায় গেরুয়া রথ। পরপর ভোট বিপর্যয়ে তাই কি বাংলা নিয়ে ‘ঈর্ষাপরায়ণ’ কেন্দ্রের শাসকদল? উন্নয়নের বদলে নির্বাচনী উত্থান-পতনই অন্যতম প্রধান বিবেচ্য? এই প্রশ্ন ঘিরেই তীব্র জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। কেন? রেলমন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে খবর, এবারের রেল বাজেটেও ভরছে না বাংলার ঝুলি। রাজ্যের একাধিক রেল প্রকল্পে এবারেও প্রাপ্তি হবে নামমাত্রই। নতুন রেললাইন থেকে ডাবলিং বা গেজ পরিবর্তন—বাংলার এমন বহু প্রকল্পেই ‘প্রতীকী’ বরাদ্দ করতে চলেছে মোদি সরকার। শুধুমাত্র মেট্রো প্রকল্পগুলিকে সামান্য ‘আলো’ দেখানো হতে পারে। একের পর এক নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির ভরাডুবির জেরেই কি রেল বাজেটে অর্থ বরাদ্দে ক্রমাগত বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে বাংলার মানুষকে? স্বাভাবিকভাবেই এ প্রশ্ন উঠছে।
আগামী ২৩ জুলাই পূর্ণাঙ্গ সাধারণ বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। রেল সূত্রে খবর, সেদিনই বা পরের দিন, ২৪ জুলাই জোনভিত্তিক প্রকল্প সম্বলিত রেলের ‘পিঙ্ক বুক’ প্রকাশিত হতে পারে। সেখানেই বাংলার বঞ্চনার ছবি স্পষ্ট হতে চলেছে। প্রত্যাশিতভাবেই সম্ভাব্য বাজেট বরাদ্দ নিয়ে রেলমন্ত্রক সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে রেল বোর্ড সূত্রে জানানো হয়েছে, ‘রেল বাজেটে কখনওই রাজ্যভিত্তিক অর্থবরাদ্দ হয় না। রেলওয়ে জোনের জন্য টাকা দেওয়া হয়। একেকটি জোন একাধিক রাজ্যকে ‘কভার’ করে। ফলে এর সঙ্গে নির্বাচনে হারা-জেতার কোনও সম্পর্ক নেই।’
রেল সূত্রের ব্যাখ্যা, প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখে তবেই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। জমি সমস্যা সহ বিভিন্ন কারণে অনেক সময়ই প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়। তখন প্রতীকী বরাদ্দ করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পকে জিইয়ে রাখা হয়। পরে কাজে গতি এলে সেইমতো অর্থ বরাদ্দ হয়। এটি ‘টেকনিক্যাল’ বিষয়। ‘রাজনৈতিক’ নয়।’ যদিও বাস্তব চিত্রটা একেবারেই আলাদা। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, রেলের একাধিক জোনের মধ্যে পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের একটি বড় অংশ বাংলাকে ‘কভার’ করে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের অন্তর্বর্তী বাজেটই শুধু নয়। ২০২৩-২৪, ২০২২-২৩ বা ২০২১-২২ আর্থিক বছরের রেল বাজেট যদি খতিয়ে দেখা যায়, তাহলেই স্পষ্ট হবে, বহু ক্ষেত্রেই বাংলার জন্য নামমাত্র এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবারের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে সেই ধারাই বজায় থাকতে চলেছে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞ মহলের।