• পাকাবাড়ির জন্য রোজ ভূরি ভূরি আবেদন ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: বাংলায় ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র দিয়েও তার টাকা দেয়নি কেন্দ্র। এইভাবে কেটে গিয়েছে দেড় বছরেরও বেশি সময়। ফলে বাধ্য হয়েই ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ি তৈরির টাকা কেন্দ্র না দিলে, রাজ্যের কোষাগার থেকেই গরিবের বাড়ি করে দেবেন বলে কথা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে মাথায় পাকাছাদের আশায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রতিদিন বাড়ি তৈরির অনুদান চেয়ে নতুন করে আবেদন করছেন হাজার হাজার মানুষ। ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’র সেলে আসা আবেদনের সংখ্যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ খোদ পদস্থ কর্তাদের। 


    ২০২৩ সালের ৮ জুন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে রাজ্য সরকার। সেখানে যোগাযোগ করে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যেকোনও অভিযোগ জানাতে পারে আম জনতা। নবান্ন সূত্রের খবর, শুরুর দিন থেকে এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র পাকাবাড়ি চেয়ে আবেদন এসেছে এক লক্ষ ৩৪ হাজার। এখানেই শেষ নয়, এই সমস্ত আবেদনকারীর একাংশ আবার মরিয়া হয়ে একাধিকবারও আবেদন করেছেন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। একই ব্যক্তির একাধিক আবেদনের সংখ্যাটিও বেশ বড়। রাজ্যের বিশ্লেষণে এমন ৩৮,৮৪২টি আবেদনের কথা জানা গিয়েছে। যাচাই করে দেখা গিয়েছে যে, এদের কিছু আবার বাড়ি পাওয়ার যোগ্যই নয়।


    পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানান, রাজ্যের গরিব মানুষকে ঠকাচ্ছেন মোদিবাবু। ওঁর মায়া-মমতা বলে কিছু নেই। উনি শুধুই সংকীর্ণ রাজনীতি করেন। ওঁর ঔদ্ধত্যের কাছে গরিব মানুষের আর্জির কোনও দাম নেই। ঠিক সময় টাকা ছাড়লে মানুষকে এমনভাবে হাপিত্যেশ করতে হতো না। এই পরিস্থিতিতে যিনি তাঁদের সুরাহা দিতে পারবেন, স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কাছে সাধারণ মানুষ আবেদন জানাচ্ছেন। আমাদের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাই তিনিই সকলের ভরসা। 


    সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে থাকা আবাস, গ্রামীণ রাস্তা, ১০০ দিনের কাজ, নিকাশি ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, বেআইনি নির্মাণ, বার্ধক্য ভাতা সহ ২১টি বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষ অভিযোগ জানায়। সূত্রের খবর, এর মধ্যে সবথেকে বেশি আবেদন এসেছে বাড়ি তৈরির অনুদান চেয়ে। তারপরেই রয়েছে গ্রামীণ রাস্তা তৈরির দাবি জানিয়ে আবেদন। তার সংখ্যা ৮৩,৪৫১। পথশ্রী প্রকল্পের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্য সরকার বহু রাস্তার কাজ করেছে। ১০০ দিনের কাজের আবেদন এসেছে ৭,৮৪১টি। সেগুলির সুরাহা করা হয়েছে কর্মশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে। কিন্তু আবাসের ক্ষেত্রে সকলের নজর রয়েছে ডিসেম্বর মাসের দিকে। ওই ১১ লক্ষ বাড়ির টাকা কেন্দ্র না দিলে, গ্রামীণ আবাস প্রকল্পের চূড়ান্ত তালিকার পাশাপাশি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে যাঁরা আবেদন জানিয়েছেন তাঁদেরও টাকা তখন দেওয়া হয় কি না সেদিকেই নজর সকলের। উল্লেখ্য, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে আসা আবেদনও যাচাই করে তালিকা তৈরি রাখা হচ্ছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)