• রাতে পার্টির শেষে তরুণীকে ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার অভিযুক্ত
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শেক্সপিয়র সরণি এলাকার একটি অভিজাত পাবে আলাপ হয়েছিল দু’জনের। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ‘বন্ধুত্ব’ হয়ে যায় তরুণ-তরুণীর। রাতভর পার্টির পর তরুণীকে ভোরের কলকাতা ঘুরে দেখা ও একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার প্রস্তাব দেয় অভিযুক্ত। কিন্তু এর আড়ালে যে তার কুমতলব রয়েছে, সেটা বোঝেননি ওই তরুণী। প্রস্তাবে তিনি রাজি হন। এরপরই গাড়িতে তুলে শ্যামপুকুরে একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে দীপক মুখোপাধ্যায় ওরফে দীপ নামে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে শ্যামপুকুর থানা। তরুণীর মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে।


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্যামপুকুর এলাকার বাসিন্দা ওই যুবকের সল্টলেকে দু’টি গেস্ট হাউস রয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন ক্লাবে রাতভর পার্টি করে বেড়ায় সে। সেখানে আসা তরুণীদের সে টার্গেট করে। তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব জমিয়ে বিভিন্ন রকম অশ্লীল মেসেজ ও ভিডিও পাঠাত বলে অভিযোগ। 


    নির্যাতিতা তরুণী সোমবার শেক্সপিয়র সরণি এলাকার ওই পাবে পার্টিতে গিয়েছিলেন। সেখানে আগে থেকে হাজির ছিল ওই যুবক। নিজেই তরুণীর কাছে এগিয়ে এসে আলাপ করে। আদানপ্রদান হয় মোবাইল নম্বরও। সারারাত পার্টির পর ক্লান্ত হয়ে পড়েন তরুণী। এই সুযোগে অভিযুক্ত তাঁকে প্রস্তাব দেয় দু’জনে মিলে একটু খাওয়াদাওয়া করবে। পাশাপাশি কলকাতা ঘুরে দেখবে। সফর শেষে তাঁকে বাড়িতে ছেড়ে দেবে। তরুণী এতে রাজি হলে তাঁকে বিভিন্ন জায়গা ঘুরিয়ে অভিযুক্ত তার গেস্ট হাউসে নিয়ে আসে। ঘণ্টাখানেক পর ওই যুবক তরুণীকে নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। 


    তরুণী পুলিসকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত তাঁকে নিয়ে আসে শ্যামপুকুরের ফ্ল্যাটে। সেখানে কেন আনা হল, তিনি এই প্রশ্ন করলে অভিযুক্ত জানায় এখানে খাওয়াদাওয়ার পর তাঁকে বাড়িতে ছেড়ে আসবে। তিনি তাতে রাজি হননি। নির্যাতিতার দাবি, জোর করে তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় বেডরুমে। সেখানে ধর্ষণ করা হয় তাঁকে। কোনওক্রমে তিনি অভিযুক্তের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচেন। সেখান থেকে সোজা চলে আসেন শ্যামপুকুর থানায়। ঘটনার কথা জানালে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিস। ঘরে ঢুকে তদন্তকারীরা দেখেন বিছানা লণ্ডভণ্ড হয়ে রয়েছে। দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তির চিহ্ন রয়েছে। তাঁরা বুঝতে পারেন মহিলা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এরপর শ্যামপুকুর এলাকা থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। জেরায় অভিযুক্ত পুলিসকে জানিয়েছে, তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর নির্যাতিতা নিজে থেকে তার ফ্ল্যাটে যেতে রাজি হয়েছিল। যদিও তার বক্তব্য মানতে রাজি নন তদন্তকারীরা। সল্টলেকের গেস্ট হাউসে তরুণীর উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে কি না, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে বালিশের চাদর, বেড শিট সহ একাধিক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)