নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাস্তায় মদ্যপানে বাধা দেওয়ায় বোতল দিয়ে কনস্টেবলের মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠল বাউন্সারের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত কনস্টেবল দেবাশিস মণ্ডলের মাথায় ১৪টি সেলাই পড়েছে। বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার সোনাগাছি এলাকায়। অভিযুক্ত রাহুল দাসকে গ্রেপ্তার করেছে বড়তলা থানা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মদের বোতল। রাহুলের বিরুদ্ধে অন্য কোনও অপরাধের অভিযোগ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিস।
থানা সূত্রে খবর, নিয়মমাফিক বাইকে চড়ে এলাকায় নাইট পেট্রলিং করছিলেন দেবাশিস মণ্ডল ও উদয় বর্মন। সোনাগাছি এলাকায় পৌঁছতে তাঁদের ভোর হয়ে যায়। এই সময় দুই পুলিসকর্মীর নজরে আসে, রাস্তায় বসে মদ্যপান করছে এক যুবক। কর্তব্যরত পুলিসকর্মীরা তাকে রাস্তা থেকে সরে যেতে বলে। পাশাপাশি জানায়, প্রকাশ্য রাস্তায় মদ্যপান নিষিদ্ধ। নিয়ম না মানলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। অভিযোগ, পুলিসকর্মীদের কথায় সে কান দেয়নি। উল্টে তাঁদের সামনে মদ খেতে থাকে। ওই দুই পুলিসকর্মী আবার তাকে সেখানে মদ খেতে নিষেধ করেন। অভিযোগ, রাহুল তখন তর্ক জুড়ে দেয়। পুলিসকে লক্ষ্য করে গালিগালাজও করে। রাস্তা থেকে বোতল তুলে বড়তলা থানার কনস্টেবল দেবাশিসের মাথায় মারে। তাতে বোতলটি ভেঙে যায়। এরপর বোতলের ভাঙা অংশ দিয়ে কানের পাশের অংশে আঘাত করে। রক্তাক্ত হয়ে পড়েন ওই কনস্টেবল। পোশাক রক্তে ভিজে যায়। তখন অন্য কনস্টেবল যুবককে ধরে ফেলেন। খবর যায় বড়তলা থানায়। আহত কনস্টেবলকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যেভাবে তাঁর মাথার উপর কাচের বোতলটি ভাঙা হয়েছে তাতে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। রাহুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত পুলিসকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
অভিযুক্ত পুলিসের কাছে দাবি করেছে, সে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিসের বাইকে তার পায়ে ধাক্কা লাগে। প্রতিবাদ করলে দুই পুলিসকর্মী তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এই নিয়ে তার সঙ্গে দুই কনস্টেবলের গোলমাল বেধে যায়। তবে বোতল দিয়ে পুলিসকে মারার বিষয়টি সে স্বীকার করেছে। যদিও তার দাবি, বোতলটি রাস্তায় পড়েছিল। সে মদ্যপান করছিল না। রাহুলের এই বক্তব্য মানতে নারাজ তদন্তকারীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবক বাউন্সারের কাজ করে। সোনাগাছি এলাকার ওই বাসিন্দা প্রতি রাতে রাস্তায় বসে মদ্যপান করে। বাউন্সারের কাজ করায় ছোটোখাটো বিষয়ে বিভিন্ন লোকজনকে মারধর করত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনও থানায় অভিযোগ হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র