• এখনও অধরা সাদ্দাম, ১২ সদস্যের ‘সিট’ গড়ল পুলিস
    বর্তমান | ১৮ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বারুইপুর: দু’দিন কেটে গেলেও কুলতলির নকল সোনা কারবারি সাদ্দাম সর্দারের নাগাল পেল না পুলিস। সোমবার তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিসের সঙ্গে গ্রামবাসীদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিসকে লক্ষয করে গুলিও চলে। তার মধ্যেই সুযোগ পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল এই দুষ্কৃতী। তারপর থেকে তার গতিবিধি বা সে কোথায় গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে, সে ব্যাপারে অন্ধকারে তদন্তকারীরা। সাদ্দমের ঘরের ভিতরে যে সুড়ঙ্গ পাওয়া গিয়েছে, তার রহস্যের চাবিকাঠি এই দুষ্কৃতীর হাতেই। ফলে যতক্ষণ না কুলতলির এই অপরাধ জগতের বেতাজ বাদশা ধরা পড়ছে, ততক্ষণ ওই গোপন সুড়ঙ্গ নিয়ে সৃষ্ট হাজার প্রশ্নের উত্তর মিলবে না। তাই এই দুষ্কৃতীকে ধরতে এবার আঁটঘাট বেঁধে নামছে বারুইপুর পুলিস জেলা। পুলিস সুপার পলাশ ঢালির নির্দেশে ১২ জনের একটি ‘স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম’ (সিট) গঠন করা হয়েছে। কুলতলি, জয়নগর এবং বকুলতলা থানার আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত এই সিটের নেতৃত্ব দেবেন বারুইপুর মহকুমা পুলিস আধিকারিক অতীন বিশ্বাস। বুধবার কুলতলির পায়তারাহাট গ্রামে আর কোনও অভিযান চালায়নি পুলিস। এফআইআরে নাম থাকা ২৬ জনের মধ্যে তিনজন ইতিমধ্যেই পুলিস হাজতে গিয়েছে। বাকি ২৩ জন কোথায় বা তারা আদৌ সাদ্দামের সঙ্গে রয়েছে কি না, সে ব্যাপারেও কোনও সদুত্তর মেলেনি পুলিসকর্তাদের থেকে। 


    এদিকে, কুলতলিকাণ্ডে স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। সাদ্দামের যে দল ছিল তার মধ্যে থেকে আহেদ আলি মোল্লা ওরফে বোটো ও ছাকাত আলি সর্দার নামে দুই যুবক কুলতলি থানার কিছু পুলিসকর্মীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। তাদের গতিবিধির ব্যাপারে খবরাখবর রাখত এই দুই যুবক। কোনও বিপদের আশঙ্কা, রেইডের সম্ভাবনা বা পুলিস সংক্রান্ত কোনও তথ্য দেওয়ার থাকলে, তারাই সাদ্দামকে সবটা জানিয়ে দিত। এইভাবে বহুবার পুলিসি অভিযানের আগেই আগাম খবর পেয়ে পালিয়ে গিয়েছে সাদ্দাম।   


    সাদ্দাম পলাতক হলেও, কুলতলির ‘বাগদাদ’ পয়তারাহাট গ্রাম এলাকা পুরুষশূন্য। এলাকায় অনেকেই এই নকল সোনার মূর্তির কারবারে জড়িত। গ্রেপ্তারির ভয়ে এলাকায় নেই কেউই। পুলিস এই কারবারের বিষয়ে আগে থেকে জানলেও, কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের একাংশ বলেন,  এই কারবারের টাকার ভাগের একটা অংশ যেত পুলিসের কাছে। এদিকে মঙ্গলবার ধানখেত থেকে ধৃত আফতাব আলিকে সাতদিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এলাকার লোকজন কোনও কথাই এখন বলতে চাইছেন না। সাদ্দামের আতঙ্ক যে তাদের পিছু ছাড়েনি, সেটা স্পষ্ট। এদিন সাদ্দামের পয়তারাহাটের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে গেটের তালা রাতে কেউ ইট দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করেছিল। তার বাড়িতে যে গোরু, ছাগল ও মুরগি রয়েছে, তাদের অসহায় অবস্থা। কারণ খাবার দেওয়ার কেউ নেই। তিন বিঘে জমিতে তারা  চরে বেড়াচ্ছে। দেখার কেউ নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)