'সুচারুভাবে' চলত প্রতারণা চক্র! শুরু থেকে 'প্ল্যানিং' করার দায়িত্ব ছিল সাদ্দাম সর্দারের! নরমে-গরমে প্রতারণার ঘটনায় 'ফিনিশিং টাচ' দিত সেই, দাবি স্থানীয়দের।কুলতলিকাণ্ডের মূল হোতা সাদ্দাম সর্দারকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার পুলিশের উপর হামলা চালানোর ঘটনায় সাদ্দাম সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাদ্দামের বিরুদ্ধে প্রতারণাচক্র চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি তার বাড়ির নীচ থেকে যে সুড়ঙ্গ পাওয়া গিয়েছে, তা নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। এলাকায় সাদ্দামের বিস্তর প্রভাব ছিল।
কিন্তু, কে এই সাদ্দাম? কী ভাবে তার উত্থান? জানা গিয়েছে, চাষাবাদ, ভেড়িতে মাছচাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করত সাদ্দাম। কিন্তু, এরপরেই তার অপরাধ জগতে হাতেখড়ি। প্রথমে স্থানীয় এলাকাবাসীকে ধমক চমক দিত সে, আদায় করত টাকা। পরে স্মাগলিংয়ে হাত পাকিয়েছিল সাদ্দাম, দাবি স্থানীয়দের। এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রতারণাচক্র ফেঁদে বসত সাদ্দাম। প্রথমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই রাখত ‘টার্গেট’-এর সঙ্গে। এরপর ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসত সাদ্দামের আসল রূপ। ধমকে চমকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত তার থেকে, অভিযোগ এমনটাই।
অতীতে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতারও হয়েছিল সে। গত সোমবার তার বাড়িতে অভিযান করে পুলিশ। কিন্তু, সেই সময় তার পরিবারের মহিলারা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় বলে অভিযোগ। শূন্যে গুলি চালায় তার ভাই। সেই সুযোগে পালিয়ে যায় সাদ্দাম। এরপর সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য সাদ্দামের স্ত্রী রাবেয়া বিবি এবং মাসুদা সর্দার নামক এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বিরাট পুলিশ বাহিনী সাদ্দামের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেই সময়ই একটি সুড়ঙ্গের বিষয় নজরে আসে।
তা প্রায় ৪০ ফুট দূরে বাড়ি লাগোয়া একটি খালের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ওই সুড়ঙ্গটি কয়েক বছর আগেই তৈরি করা হয়েছিল। তবে তা কী কাজে ব্যবহার করা হত, তা সাদ্দামকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই জয়নগর থানায় ১২ লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়। এই ঘটনায় উঠে আসে সাদ্দামের নাম। নকল সোনা ও মূর্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাইরে থেকে লোকজনকে ডেকে নিয়ে আসত সে। পরে 'সাদ্দাম বাহিনী' ছক কষে প্রতারণা করত তাঁদের সঙ্গে অভিযোগ এমনটাই। কী ভাবে সাদ্দাম বাহিনী কাজ করত? এই ঘটনায় কারা জড়িত ছিল? সেই যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।