স্কুলের পাঠ্যবইয়ে এবার কলকাতা ময়দান, পড়তে হবে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডানের ইতিহাস...
আজকাল | ১৮ জুলাই ২০২৪
তীর্থঙ্কর দাস:
একাদশ শ্রেণীর সিলেবাসে এবার বড়সড় চমক আনল রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। একাদশ শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে জায়গা পেল কলকাতা ময়দান। বাংলার তিন ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব হল মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান স্পোর্টিং। একাদশ শ্রেণীতে পড়তে হবে এই তিন প্রধানের ফুটবল ইতিহাস। শরীরচর্চার সঙ্গে ফুটবল অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িত। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই একাদশ শ্রেণীর ফিজিক্যাল এডুকেশন সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই তিন প্রধানের ইতিহাস। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার আজকাল ডট ইনকে জানিয়েছেন, ‘আমাদের কাছে এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। সবার প্রথমে ধন্যবাদ আনতে চাই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে। অনেকদিন ধরে এই বিষয়ে কথা চলছিল, অবশেষে তা সম্পূর্ণ হল। আমরা অনুরোধ করতে চাই যদি ফুটবলকে কেন্দ্র করে প্রতিটা বিদ্যালয়ে একটা করে ক্লাস করানো সম্ভব হয়। ইস্টবেঙ্গলকে দায়িত্ব দেওয়া হলে আমরা তা মাথা পেতে গ্রহণ করতে রাজি’।
অন্যদিকে, মহামেডান স্পোর্টিংয়ের ফুটবল সচিব দীপেন্দু বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘এই উদ্যোগের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কলকাতার এই তিন ক্লাবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির আবেগ, ভালোবাসা। এই উদ্যোগের ফলে বর্তমান জেনারেশন জানতে পারবে বাংলা ফুটবলের ইতিহাস। তাঁরা জানতে পারবে কারা সেই সময়ে খেলতেন, বর্তমান ফুটবলের সঙ্গে পুরোনো দিনের ফুটবলের তফাৎ কোথায় রয়েছে এবং নানা অজানা বিষয়ের সম্পর্কে। শিক্ষার মাধ্যমে ফুটবলের ইতিহাস জানানোটা খুবই ভাল উদ্যোগ। ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা আনন্দটা’।
শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘স্বাধীনতার আগে এবং পরে এই তিন ক্লাবের অবদান সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের জানার প্রয়োজন রয়েছে। এই কারণেই সংসদ এই তিন ক্লাবের ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একাদশ শ্রেণির ফিজিক্যাল এডুকেশন সিলেবাসে এই বিষয়ে ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানো হবে। সিলেবাসে ক্রীড়াজগতের ইতিহাস বলে একটি ভাগ রয়েছে। তার মধ্যে বর্তমানে অলিম্পিকের ইতিহাস, ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব, ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলের ইতিহাস পড়ানো হয়ে থাকে। এর সঙ্গে কলকাতা ময়দানের তিন প্রধানের ইতিহাস যোগ হবে’।
রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের এই উদ্যোগে আনন্দ প্রকাশ করেছেন মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত। আজকাল ডট ইনকে তিনি জানিয়েছেন, ‘এই সিদ্ধান্তের জন্য মমতা ব্যানার্জিকে ধন্যবাদ দিচ্ছি । ধন্যবাদ জানাই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও । মোহনবাগানের অবদানের কথা ইতিহাস বইয়ে অর্ন্তভুক্ত হলে নতুন প্রজন্ম আরও বেশি করে জানবে’। বাংলা তথা ভারতের ফুটবল ইতিহাসে শতবর্ষ প্রাচীন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অবদান অনস্বীকার্য। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গেও নাম জড়িয়ে রয়েছে এই তিন ক্লাবের। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই পঠন পাঠন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর।