নন্দীগ্রাম আন্দোলনে নিখোঁজ তিন পরিবারকে মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে নির্দেশ হাইকোর্টের
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৮ জুলাই ২০২৪
নন্দীগ্রাম আন্দোলনে ‘নিখোঁজ’ হয়েছিলেন তিনজন। জেলা পরিষদের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী তাঁদের মৃত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুর শংসাপত্র পাননি। তা নিয়ে মামলা গড়ায় ওই কলকাতা হাইকোর্টে। আজ, বৃহস্পতিবার আগামী একমাসের মধ্যে তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র রাজ্য সরকারকে দিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি শম্পা সরকার। এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পরই এক্স হ্যান্ডেলে কলকাতা হাইকোর্টকে কৃতজ্ঞতা জানান নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
এদিকে কেন এত দেরি হল? এই প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারের কাছে তার কৈফিয়ত চান বিচারপতি শম্পা সরকার। পঞ্চায়েত দফতরের অফিসাররা নিজেদের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়ে দ্রুত ওই তিন পরিবারের হাতে মৃত্যুর শংসাপত্র তুলে দেবেন বলে জানান। আগামী একমাসের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলেছেন বিচারপতি। গত ১৪ বছর ধরে লড়াই করছে এই তিন শহিদ পরিবার। আজ শুনানি চলাকালীন বিচারপতি শম্পা সরকার পঞ্চায়েতকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কী কারণে এত দেরি হচ্ছে?’ পঞ্চায়েত অফিসাররা বলেন, ‘দেরি হচ্ছে। আমাদের ভুল আমরা স্বীকার করছি। কিন্তু এখন অনলাইন আবেদন করতে হবে।’
অন্যদিকে গত ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মিছিল ছিল। সেখানে হামলার অভিযোগ ওঠে। চারজনের প্রাণহানি হয়। নিখোঁজ হন অন্তত ১২ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আদিত্য বেরা, সত্যেন গোলে, বলরাম সিং। ওই তিনজনই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য। পরিবারের সদস্যদের দাবি, তাঁদের খুন করা হয়েছে। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তালিকায় এই তিনজনকে মৃত বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত থেকে মৃত্যুর শংসাপত্র না পাওয়ায় নানা ধরনের প্রশাসনিক জটিলতায় পড়ছিল পরিবারগুলি। আর ডেথ সার্টিফিকেট চেয়ে ২০২৩ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তিনটি পরিবার।
এই নির্দেশ আসার পরই নিজের দিকে ঝোল টানলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিষয়টি নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন। শুভেন্দু লেখেন, ‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে ভর করে রাজ্যের ক্ষমতায় এল তৃণমূল, অথচ সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় শহিদের পরিবারকে মৃত্যুর শংসাপত্র নিতেও কলকাতা হাইকোর্টে যেতে হচ্ছে। আমি বিচারপতিকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় নন্দীগ্রামের শহিদদের অবহেলা করেন। ওই তিনজনের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দিচ্ছি। ভূমি আন্দোলনে তিন শহিদের নাম—আদিত্য বেরা, সত্যেন গোলে, বলরাম সিং।’