মোদির স্লোগান বদলে দিতে চাইছেন শুভেন্দু? নিজের দায়িত্ব নিয়ে কী বললেন বিরোধী দলনেতা?...
আজকাল | ১৯ জুলাই ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: লোকসভা ভোটের ফলাফল এরাজ্য-সহ গোটা দেশেই গেরুয়া শিবিরের খুব একটা ভাল হয়নি। বাংলায় গত লোকসভা ভোটের পর, ক্রমাগত আস্ফালনের পরেও বাংলায় গেরুয়া শিবিরের ভোট-আসন কমেছে লক্ষণীয় ভাবে। এর পরেই, বুধবার পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিল বিজেপি। আলোচনায় কী উঠে আসে নজর ছিল সেদিকেই। তবে সেসব ছাপিয়ে সামনে এল রাজ্যের বিরোধী দলনেতার একার বক্তব্য।
এদিনের বৈঠকে বেশকিছু মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। কোনও মন্তব্যে প্রশ্ন উঠছে, মোদির স্লোগান কি বদলে ফেলতে চাইছেন তিনি? কোনও মন্তব্যে আবার প্রশ্ন উঠল, তাহলে কি তৃণমূল-ফেরত শুভেন্দু লোকসভা ভোটের শোচনীয় ফলাফলের দায় ঝেড়ে ফেললেন ঘাড় থেকে?
সায়েন্সসিটিতে এদিনের বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ বন্ধ করো। এই স্লোগান খোদ নরেন্দ্র মোদি, অর্থাৎ দেশের প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বারবার এই স্লোগানের মাধ্যমে বার্তা দিতে চেয়েছেন, বিজেপি এবং মোদি সরকার দেশের সকল শ্রেণির মানুষের সঙ্গে রয়েছেন। তাঁর স্লোগান বন্ধের ডাক দিয়ে বাংলার বিরোধী দলনেতা বললেন, ‘বলব, যো হামারি সাথ, হাম উনকা সাথ।‘ অর্থাৎ, যাঁরা আমাদের সঙ্গে, আমরাও তাঁদের সঙ্গে। স্বাভাবিক ভাবেই শুভেন্দুর এই মন্তব্যে কিছুক্ষণেই শুরু হয়েছে চর্চা। যদিও বিজেপি বিধায়কের ব্যাখ্যা, তিনি নিজের রাজনৈতিক অবস্থান থেকে এই মন্তব্য করেছেন। স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমি বলেছি, রাজনৈতিকভাবে বিজেপির তাঁদের সঙ্গেই থাকা উচিৎ, যাঁরা সঙ্গে রয়েছে।‘ সাংবাদিক বৈঠকের পর, সমাজ মাধ্যমেও নিজের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে যুক্তি দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, দলের সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজনীয়তা নেই বলেও মন্তব্য করেন।
একদিকে যেমন দল, দলের সাংগঠনিক দিক নিয়ে কথা বললেন, কোথাও গিয়ে নিজের কাঁধ থেকে দলের পরাজয়ের দায়ও ঝেড়ে ফেললেন। এই জল্পনা বাড়েছে তাঁর মন্তব্যেই। এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘দলের বিরোধী দলনেতা আমি। সংগঠনের দায়িত্বে নেই। আমি লোকসভা নির্বাচনের আগে বলুন, পরে বলুন, সংবাদ মাধ্যমের সামনে কখনও এমন একটা কথাও বলিনি, যাতে ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী-ভোটার হতাশ হয়। আমি জাতীয়তাবাদী পরিবার থেকে এসেছি।‘ শুভেন্দুর এই মন্তব্যের আচমকা কারণ কী? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই মন্তব্যে তিনি কেবল নিজের দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টাই করলেন না, তিনি একই সঙ্গে দায় ঠেলে দিলেন রাজ্য সভাপতির দিকে। সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি বিজেপির। সংগঠনের দায়িত্বও তাঁরই ঘাড়ে।
অন্যদিকে যখন শুভেন্দু এই মন্তব্য করছেন, তখনই মুরুলীধর সেন লেনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সত্যাগ্রহ আন্দোলন করছেন বিজেপির কর্মীরা। বুধবার সকাল থেকেই দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সত্যাগ্রহে বসেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, দলীয় কার্যালয় থেকে কয়েকজন বেরিয়ে দলের কর্মীদেরই জমায়েতে বাধা দেওয়া হয়, সঙ্গে অভিযোগ, বাধা দেওয়া হয়েছে। একদিকে যখন দলের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা, তখনই এই ঘটনা দলের অস্বস্তি আরও কয়েকগুন বাড়িয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।