সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের। আর সেই বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে উত্তেজিত গ্রামবাসীদের হাতে মার খেতে হল পুলিশকে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘিরে তীব্র উত্তেজনা মালদহের (Malda) মানিকচকে। মানিকচকের চণ্ডীপুর-এনায়েতপুরের রাস্তা অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। পালটা অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এনিয়ে তোলপাড় পড়তেই রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে সমালোচনা। পুলিশের এই ভূমিকায় সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল সকলেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ নিয়ে এত অশান্তি হওয়ায় বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।
পুলিশের গুলিচালনা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন সিপিএম (CPM) নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে ‘ট্রিগার হ্যাপি’ বলে কটাক্ষ করেছেন সুজন চক্রবর্তী। তাঁকে পালটা দিতে গিয়ে তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের বক্তব্য, ”বাম আমলে পুলিশ ট্রিগার হ্যাপি ছিল। নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর তার প্রমাণ।” বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে পুলিশের উপর থেকে সাধারণ মানুষের ভরসা উঠে গিয়েছে। রাজ্যে মাৎস্যন্যায় চলছে।” এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা মানিকচক বন্ধের ডাক দিয়েছে জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। তবে এই বন্ধ এখনও সমর্থন করেনি কংগ্রেস (Congress)।
মানিকচকের (Manikchak) প্রায় ১০-১৫টি গ্রামে টানা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, তা নিয়ে বিবৃতি জারি করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস (Aroop Biswas)। তাঁর বার্তা, ”মালদহের মানিকচক এলাকার এনায়েতপুরে সমস্যা হচ্ছে, সেখানে উন্নত মানের বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আর মাত্র তিনটি টাওয়ার বসানোর কাজ বাকি রয়েছ। মালদহ পাওয়ার গ্রিড থেকে মানিকচক পর্যন্ত 132 KV HT Line করার জন ৮৯ টি টাওয়ারের মধ্যে ৮৬ টি টাওয়ারের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি তিনটি টাওয়ার বসানো নিয়ে সমস্যা। এই তিনটি টাওয়ার বসানোর কাজ বাকি রয়েছে মালদহের ইংলিশ বাজারে। মূল সমস্যা হল এই ইংলিশ বাজারে কয়েকজন স্থানীয় মানুষের অসহযোগিতার জন্য তিনটি টাওয়ার বসানোর কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। দীর্ঘ ১০ মাস ধরে আমাদের বিদ্যুৎ দপ্তর, পুলিশ, প্রশাসন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দরকার স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা। আমরা আবারও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আবেদন করিছ, ওই তিনটি টাওয়ার বসানোর কাজ করার জন্য আপনারা আমাদের আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করুন। আপনাদের সহযোগিতায় আমরা এই তিনটি টাওয়ার বসানোর কাজ সম্পন্ন করতে পারলে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অন্যান্য জায়গার মতো উক্ত অঞ্চলেও উন্নত মানের বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হব।”