• বাকযুদ্ধে শামিল অরূপ-সুভাষ, থমকে গন্ধেশ্বরী দ্বারকেশ্বর বাঁধ প্রকল্প
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: ফের চৰ্চায় গন্ধেশ্বরী-দ্বারকেশ্বর নদী বাঁধ প্রকল্প। এবার প্রকল্পের অগ্রগতির লক্ষ্যে বাঁকুড়ার বর্তমান সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীকে ফোন করলেন প্রাক্তন সংসদ সদস্য তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। বৃহস্পতিবার তিনি দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বাঁকুড়ার দোনামোনা ঘাট এলাকায় যান। সেখানে থেকেই প্রকল্পের অগ্রগতির জন্য হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অরূপবাবুকে কিছু তথ্য পাঠান। ফোন করেও বিষয়টি জানান বলে সুভাষবাবু দাবি করেন। এতে বাঁকুড়ার বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদের সৌজন্যের বিষয়টি সামনে আসে। তবে পরে তাঁরা এনিয়ে বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।


    উল্লেখ্য, বাঁকুড়ায় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। সঙ্কট মেটাতে গুচ্ছ প্রকল্প নিয়েছে প্রশাসন। বাঁকুড়ার সঙ্গে দামোদরের জল প্রকল্প যুক্ত হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের একাংশেও নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছচ্ছে।  এরইমধ্যে গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদীতে বাঁধ দিয়ে বিশেষ প্রকল্প তৈরির দাবিও বাঁকুড়াবাসীর দীর্ঘদিনের। এই প্রকল্প হলে বাঁকুড়া শহর সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলের সমস্যা অনেকটা মিটতে পারে বলে আশা বাসিন্দাদের। বিজেপির প্রাক্তন সাংসদের দাবি, তিনি সাংসদ থাকাকালীন এই প্রকল্প গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। রাজ্যের অসহযোগিতার জন্যই তা করা যায়নি বলে সুভাষবাবুর অভিযোগ।


    প্রাক্তন সাংসদ বলেন, গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর প্রকল্প গড়তে কেন্দ্র একাধিকবার আলোচনার প্রস্তাব রাজ্যকে দেয়। কিন্তু, রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি তাতে হাজির হননি। তাই প্রকল্পের কাজ এগয়নি। কিন্তু, বাঁকুড়ার মানুষের স্বার্থে গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর প্রকল্প হওয়া প্রয়োজন। তাই প্রকল্পের তথ্য বর্তমান সাংসদকে পাঠিয়েছি। উন্নয়নের লক্ষ্যে সৌজন্যতা দেখিয়ে অরূপবাবুকে ফোনও করেছি। তিনিও সাড়া দিয়েছেন। ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু না হলে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এসে এই প্রকল্প গড়বে। 


    পাল্টা বর্তমান সাংসদ অরূপবাবু বলেন, কেন্দ্রকে রাজ্য অসহযোগিতা করেছে, সুভাষবাবুর এমন অভিযোগের ভিত্তি নেই। ভোটের সময় মিথ্যা অভিযোগ তুলে রাজনীতি করেছেন। আমি সাংসদ হওয়ার পর ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। প্রকল্পের রিপোর্ট সংশোধন করা হবে। প্রকল্পের ডিটেলস রিপোর্ট তৈরি হলে কেন্দ্রের কাছে তহবিল চাওয়া হবে। এই প্রকল্প গড়তে কয়েক কোটি টাকা খরচও হবে। বিজেপি বরং বাঁকুড়ায় ট্রেন বঞ্চনার বিষয়ে দৃষ্টি দিক। 


    গন্ধেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটির সহ সম্পাদক সন্তোষ ভট্টাচাৰ্য বলেন, রাজনৈতিক টানা পোড়েনের জেরে প্রকল্প আটকে আছে। সুভাষবাবুকে আমরা নানা নথি তুলে দিয়েছিলাম। বর্তমান সাংসদকে তিনি ফোন করে বিষয়টি জানানোয় আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা চাই নতুন সাংসদের হাত ধরে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হোক। 


    বাঁকুড়ার সিপিএম নেতা নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, পাঁচ বছরে কোনও কাজ করতে পারেননি সাংসদ। এখন নাটক করছেন। আসলে বাঁকুড়ার জন্য কারওরই কিছু করার ইচ্ছা নেই। বর্তমান সাংসদ সংবর্ধনা নিতে ব্যস্ত আছেন। 


    সিপিএমকে অবশ্য পাল্টা কটাক্ষ করেছেন অরূপ ও সুভাষবাবু। তাঁরা বলেন, বাম আমল থেকে এই প্রকল্পের দাবি উঠলেও তারা কিছু করেনি। তাই মানুষের রায়ে শূন্য হয়ে গিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)