সংবাদদাতা, সিউড়ি: ছোটবেলা থেকেই গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলতে খেলতে এই খেলার প্রতি আগ্রহ বেড়েছিল। তারপর জেলা ও রাজ্যস্তরের স্কুল লেভেলের বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে বীরভূমের নগরী পঞ্চায়েতের কোরাপাড়ার স্কুলপড়ুয়া রাজু কোরা। কিন্তু এখন টাকার অভাবে ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশেহারা এই কিশোর ফুটবলার।
কয়েক বছর আগে রাজুর বাবা গোপীনাথ কোরা মারা যান। তার মা পার্বতী কোরা রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে খেলোয়াড় ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করতে লড়াই করছেন। নগরী সুধাংশু বদনী শিক্ষানিকেতনে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে রাজু। অভাবের সংসারে অনুশীলনের ভালো সুযোগ পাওয়াটাই তার কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। রাজু চায়, ডিএসএ বা অন্য কোনও ভালো জায়গা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে খেলার কৌশল আরও ভালো করে রপ্ত করা। কিন্তু সেক্ষেত্রে খরচ জোগানোর মতো সামর্থ্য তাঁর নেই বলে পার্বতীদেবী জানান।
রাজু জেলা ও রাজ্যস্তরের নানা ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলেছে। এখনও সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নেয় সে। ২০২৩ সালের ২৮ এপ্রিল ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল ফর স্কুল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস খেলায় অংশ নিয়েছিল রাজু। জেলার ইন্টারস্কুল ফুটবলেও সে অংশ নিয়েছে। কিন্তু নগরীর মতো গ্রামে থেকে সঠিক অনুশীলনের অভাবে সে খেলা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কোনও দিশা পাচ্ছে না।
নগরী গ্রাম থেকেই গত কয়েক বছরে একাধিক মহিলা ফুটবল খেলোয়াড় উঠে এসেছে। এখানকার পাপিয়া মুর্মু, ইতি মুর্মু, সোনালি হেমব্রমরা বিদেশে ফুটবল খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। রাজুর ফুটবলের প্রতি আগ্রহ থাকলেও আর্থিক অনটনের কারণে ঠিকমতো অনুশীলন করতে পারছে না।
রাজুর মা বলেন, আমি সামান্য রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করি। এতে কোনওরকমে সংসারটুকু চলে। ছেলের খেলার প্রতি আগ্রহ আছে। অনেক জায়গায় খেলেও এসেছে। কিন্তু টাকার অভাবে ট্রেনিংয়ের জন্য কোথাও ভর্তি করতে পারছি না। প্রশাসন আমাদের সাহায্য করলে ছেলে খেলোয়াড় হিসেবে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ পাবে।