• এক পাশে রবীন্দ্রনাথ, অন্য পাশে নজরুল আসানসোল শহরে নয়া তোরণ পুরসভার
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: একপাশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অন্য পাশে নজরুল ইসলাম। দু’জনের মাঝে বাংলায় লেখা— ‘স্বাগতম, ভ্রাতৃত্বের শহর, আসানসোল। 


    আসানসোলের কালীপাহাড়ি মোড়। খনি শহরের প্রবেশ দ্বার। সেখানে পুরসভার উদ্যোগে তৈরি নবনির্মিত এই তোরণ বসেছে। শহরের ঢোকার মুখেই চোখে পড়বে সকলের। শহর থেকে বের হওয়ার সময়ও তোরণের অপর দিকে উজ্জ্বল উপস্থিতি স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। সেখানেও মাঝে বাংলায় বড় হরফে লেখা—‘নমস্কার, ভ্রাতৃত্বের শহর আসানসোল’। এই নতুন তোরণই ঘিরে এখন সরগরম নেট দুনিয়া। প্রশংসিত হচ্ছে আসানসোল পুরসভা। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, শহরবাসীর জন্য আরও একঝাঁক সুখবর শুনিয়েছেন আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়।  তিনি বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী শিখিয়েছেন বাংলার মণীষীদের কী ভাবে সম্মানিত করতে হয়। তাঁর ভাবধারাকে সম্মান জানিয়ে আসানসোলের প্রবেশদ্বারে বাংলার মণীষীদের ছবি রাখা হয়েছে। রাজ্য সরকার আমাদের বিশ্ববাংলা গেটের ডিপিআর অনুমোদন করেছে। কলকাতার আদলে আসানসোলের জুবলি মোড়ে বিশ্ববাংলা গেট ও রেস্তরাঁ গড়ে তোলা হবে। সাত কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেলর‌্যালে রাস্তার প্রশাসনিক মোড়ে রানা প্রতাপ সিংয়ের মূর্তি বসানো হবে। ১৫ আগস্ট শহরে আরও নানা চমক থাকবে, এখনই সব প্রকাশ্যে আনছি না।’ 


    আসানসোলে দুই গোষ্ঠীর গোলমালে মারা গিয়েছিলেন ইমাস ইমাদাদুল্লাহ রসিদির ছেলে। পুত্রশোক বুকে চেপে সেই গোলমাল থামিয়েছিলেন তিনি।  বহু বছর ধরে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ এই শহরে বসবাস করেন। তাই সৌভ্রাতৃত্বের শহর বলে পরিচিত। আসানসোলের মাটিতে পা পড়েছে ‘হিন্দু-মুসলমান’ কবিতার স্রষ্টা কাজী নজরুল ইসলামের। এখানকার একটি বেকারিতে দীর্ঘদিন কাজও করেছেন তিনি। আসানসোলের পাশে চুরুলিয়ায় তাঁর বসতভিটে। সেই নজরুল ইসলাম আর কবিগুরুর ছবি দিয়ে তোরণ বানিয়ে শহরবাসীর সাংস্কৃতিক ভাবাবেগ উস্কে দিল আসানসোল পুরসভা। পাশাপাশি যেভাবে বাংলা ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে খুশি আম বাঙালিরা। ওই এলাকাতেই আগেও একটি তোরণ ছিল। সেখানে কোন মণীষীদের ছবিকে এভাবে সামনে আনা হয়নি। ‌ইং঩রেজিতে লেখা ছিল সিটি অফ ব্রাদারহুড। তাই এই তোরণ পরিবর্তনে খুশি বাঙালিরা। 


    কালীপাহাড়ি তোরণে যেমন বাঙালির সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে, তেমনিই আসানসোলের আর এক প্রবেশপথ জুবলিতে থাকতে চলেছে আধুনিকতার ছাপ। বিশ্ববাংলা তোরণ শহরবাসীর পছন্দের জায়গা হয়ে উঠবে বলেই দাবি করছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা। 
  • Link to this news (বর্তমান)