•  রায়গঞ্জে অজানা বিষাক্ত পোকার কামড়ে জখম একাধিক
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ: অজানা পোকার কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে রায়গঞ্জে। পোকার কামড়ে পুড়ে যাচ্ছে ত্বক, তৈরি হচ্ছে ক্ষত। রায়গঞ্জ শহর ও  ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় এই পোকার কামড়ে আক্রান্তর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পাঁচ দিন আগে এই অজানা পোকা রায়গঞ্জের শেরপুরের বাসিন্দা রুনা সিংহর হাতে কামড় দেয়। রুনা বলেন, প্রথমে মনে হয়েছিল পিঁপড়ের কামড়। কিন্তু পরে হাতে ফোসকা পড়ে যায়। ব্যথা ও চুলকানি শুরু হয়। ডাক্তার জানান, কোনও পোকার কামড়ে এটা হয়েছে। রুনার এক প্রতিবেশীও এই পোকার কামড়ে আক্রান্ত। আক্রান্তরা বলছেন, এই পোকা কামড় দিলে ব্যথার সঙ্গে জ্বর চলে আসে। এক সপ্তাহ ধরে ওষুধ খাওয়ার পর ধীরে ধীরে ক্ষত জায়গাটি সারে।


    গত ৬ জুলাই এই অজানা পোকার কামড়ে মৃত্যু হয় রায়গঞ্জে সোহরাই এলাকার বাসিন্দা পম্পা দাসের। এমনটাই দাবি মৃতের পরিবারের। ফুল তুলতে গিয়ে পোকাটি কামড় দেয় বলে পরিবারের দাবি। প্রথমে বাড়িতেই চিকিৎসা করা হয় পম্পার। পরে অবস্থার অবনতি হলে পম্পাকে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বধূর। জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিমেষ দত্ত বলছেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। পতঙ্গ রোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করব।


    রায়গঞ্জ শহরের শক্তিনগর, বীরনগর, দেবীনগর ঝোপঝাড় এলাকা। কুলিক নদী লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারাও এই অজানা পোকার কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে কোন পোকার কামড়ে এই ধরনের ক্ষত হচ্ছে, সে বিষয়ে কেউই নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। 


    এই পোকার কামড়ে আক্রান্ত রায়গঞ্জের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিম্পা ঘোষও। তিনি বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখছি হাতের বিভিন্ন জায়গায় ফোসকা। তারপর ব্যথা হয়, জ্বর আসে। 


    রায়গঞ্জের বাসিন্দা অনুপ সাহা বলেন, আমার মেয়েও আক্রান্ত। খুব আতঙ্কে রয়েছি। এপ্রসঙ্গে রায়গঞ্জ পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, আমার ওয়ার্ডের অনেকেই এই অজানা পোকার কামড়ে আক্রান্ত। আমরা ঝোপঝাড় পরিষ্কার করছি। আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়,দেখছি। তবে এই পোকা কামড়ালে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর।


    পোকাটির সম্পর্কে কেউ নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে না পারলেও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছেন রায়গঞ্জের বিশিষ্ট চিকিৎসক শান্তনু দাস। বলেন, আমি এধরনের কিছু ঘটনা শুনেছি। চিন্তার বিষয়। প্রথমে মনে হয়েছিল ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া থেকে এধরনের রোগ হচ্ছে। এখন রোগের প্রকৃতি থেকে মনে হচ্ছে কোনও পোকার কামড়ে এটা হচ্ছে। এই রোগ নিয়ে দ্রুত সমীক্ষা ও পরীক্ষানিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি ডাঃ দাসের।
  • Link to this news (বর্তমান)