• সিজারের পর অজানা সংক্রমণে মৃত্যু, বিশেষজ্ঞ কমিটি চাইল ইমামবাড়া হাসপাতাল
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: প্রসূতিদের এক অজানা সংক্রমণকে ঘিরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। গত সোমবার একই চিকিৎসকের কাছে সিজার করানো পাঁচ প্রসূতির দেহে এই সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে বুধবার দুই প্রসূতিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজন বৃহস্পতিবার সকালে মারা গিয়েছেন। প্রসূতির মৃত্যুতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি দল গড়েছে। তাঁরাই তিনজন প্রসূতির চিকিৎসা চালাচ্ছে। ওই তিনজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্যভবনে আবেদন করা হয়েছে। 


    ঠিক কী থেকে সংক্রমণ, তা বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত খুঁজে পাননি চিকিৎসকরা। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রসূতিদের প্রত্যেকের রক্তচাপের সমস্যা, তীব্র শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছে। তাঁদের ডায়ালিসিস করাতে হয়েছে। কোনও ওষুধ থেকে সংক্রমণ কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, পাঁচ শিশুকেই এসএনসিইউতে রাখা হয়েছে। হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ মৃগাঙ্কমৌলি কর বলেন, সংক্রমণের কারণ খতিয়ে দেখার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। কোথাও কোনও গাফিলতি আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। হাসপাতালের সুপার ডাঃ অমিতাভ মণ্ডল বলেন, আমরা স্বাস্থ্যভবনকে পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি পাঠাতে অনুরোধ করেছি। সব প্রসূতিকেই মেডিক্যাল কলেজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চুঁচুড়ায় চিকিৎসাধীন সাজিনা বিবির স্বামী সামাদ শেখ বলেন, সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। সোমবার আমার স্ত্রীর সিজার হয়েছিল। তারপর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন যে, স্ত্রীর শরীরে ব্যাপক সংক্রমণ হয়েছে। আরও চারজনের ওই রকম সংক্রমণ হয়েছে বলেও জানতে পারি। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।


    ইমামবাড়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার শুরু সোমবার রাত থেকে। ওইদিনই এক মহিলা প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ পাঁচজনের সিজার করেন। দুপুরের মধ্যেই সকলের সিজার করা হয়েছে। কিন্তু রাত থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। পাঁচজনের শরীরেই তীব্র সংক্রমণ ধরা পড়ে। দ্রুত তাঁদের আইসিসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক দিলেও সংক্রমণকে কোনওমতেই সামাল দেওয়া যায়নি। ততক্ষণে কিডনি সংক্রমণের জেরে ডায়ালিসিস করানো শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত দুই প্রসূতিকে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। তাঁদেরই একজন অঞ্জনা মণ্ডল বৃহস্পতিবার সকালে মারা গিয়েছেন। ফলে হাসপাতাল প্রশাসনে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। যার স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞ কমিটি চাওয়ায়।
  • Link to this news (বর্তমান)