চাষের জমিতে মিলল পচাগলা দেহ ও হাড়গোড়, জগৎবল্লভপুরে চাঞ্চল্য
বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বৃহস্পতিবার সাতসকালে চাষের জমিতে পচাগলা দেহ ও হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে। ঘটনার কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই ভিড় জমতে শুরু করে ওই চাষের জমিতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে জগৎবল্লভপুর থানার পুলিস। তারা ওই পচাগলা দেহ এবং হাড়গোড় উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। স্থানীয় একটি পরিবারের দাবি, তাদের এক পরিজন গত ছ’দিন ধরে নিখোঁজ। উদ্ধার হওয়া দেহ বা হাড়গোড়ের সঙ্গে ওই ব্যক্তির কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
স্থানীয় এবং পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে জগৎবল্লভপুর থানা এলাকার মাজুর ফিঙ্গাগাছি মাইতিপাড়া এলাকায়। গ্রাম সংলগ্ন একটি চাষের জমিতে এদিন কাজ করতে গিয়ে প্রথমে কিছু হাড়গোড় দেখতে পান কৃষকরা। মুহূর্তের মধ্যেই মাঠে কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছে বলে এলাকায় খবর রটে যায়। তা দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে দলে দলে মানুষ এসে ভিড় জমান সেখানে। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিসও। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এলাকার এক বাসিন্দা ব্রজানন্দ গোস্বামী (৬৫) কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ। ওই পরিবারের লোকজন পচাগলা মৃতদেহ ও হাড়গোড়গুলি তাঁদের পরিবারের সদস্যের বলে দাবি করে। কারণ উদ্ধার হওয়া দেহের আশপাশে ধুতি ও গামছার অংশবিশেষ মিলেছে। তা দেখেই দেহটি ব্রজানন্দর বলে দাবি করে তাঁর পরিবার। আপাতত পুলিস সেই দাবির ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। দেহাংশ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। কী কারণে তিনি নিখোঁজ বা মৃত্যুর পিছনে কারণ খুঁজতে শুরু হয়েছে তদন্ত। তবে মাত্র ছ’দিন নিখোঁজ থাকার পর একজনের দেহ কীভাবে কঙ্কাল হয়ে যেতে পারে, তা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছেন তদন্তকারীরা। ওই পরিবারের দাবি সঠিক কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, দেহ উদ্ধারের পর স্থানীয় বাসিন্দা রিন্টু দলুই বলেন, রক্ত-মাংসের প্রায় কোনও চিহ্নই ছিল না। বেশিরভাগ হাড়গোড়। আমার এক বন্ধুর বাবাও ছ’দিন ধরে নিখোঁজ। তাঁদের বাড়ির লোক বলছেন, এই দেহ ওই বন্ধুর বাবার। তবে দেহ দেখে তো চেনার উপায় নেই।
বিষয়টি নিয়ে হাওড়া গ্রামীণ পুলিসের এক কর্তা বলেন, মাঠ থেকে আমরা বেশ কিছু হাড় এবং দেহের অংশ উদ্ধার করেছি। পায়ের দিকে কিছুটা অংশ পচাগলা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেহটি দেখে মনে হচ্ছে, বন্যপ্রাণীর দল দেহ থেকে মাংস খুবলে নিয়েছে। স্থানীয় একটি পরিবার দাবি করেছে, এটি তাদের পরিবারের এক নিখোঁজ সদস্যের দেহ। আমরা সেই দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হচ্ছে মৃত্যুর কারণ এবং মৃতদেহটি কার। সেটি চাষের জমিতে এল কীভাবে, তাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।