আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে বাসের চাকায় পিষে মৃত্যু পথচারীর
বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ফের ডায়মন্ডহারবার রোড। ফের ৩এ বাস স্ট্যান্ড। ফের বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক পথচারীর। বৃহস্পতিবার সকালে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের। মৃতার নাম বিষ্ণুপ্রিয়া পাত্র (৭৭)। ফলতা থানার শিরাকোলের বাসিন্দা তিনি। ঠাকুরপুকুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিলেন বৃদ্ধা। বাসের একেবারে সামনে দিয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় সিগন্যাল সবুজ হয়ে যায়। চালকের ব্লাইন্ড স্পটে পড়ে যান বৃদ্ধা। তাঁকে দেখতে না পাওয়ায় বাস ছেড়ে দেন চালক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও এক পথচারী। তাঁর মাথা ফেটেছে। আহতের নাম মীনাক্ষী দাস (৬০)। তিনি বিষ্ণুপুর থানা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিস সূত্রের দাবি, এদিন বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। সেই সময় তারাতলাগামী রাস্তায় ৩এ বাসস্ট্যান্ড ক্রসিংয়ের সিগন্যালে দাঁড়িয়েছিল ডায়মন্ডহারবার থেকে ধর্মতলা রুটের একটি বেসরকারি বাস। প্রত্যক্ষদর্শী অসিত মাল বলেন, তাড়াহুড়ো করে রাস্তা পার হতে যান দুই বৃদ্ধা। স্টপলাইন পার করেই দাঁড়িয়েছিল বাসটি। ঠিক বাসের সামনে দিয়ে পার হচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময় সিগন্যাল সবুজ হয়ে যায়। ফলে ওই দুই বৃদ্ধাকে দেখতে না পেয়ে বাসটি চালিয়ে দেন চালক। সঙ্গে সঙ্গে একজন চাকার তলায় পিষ্ট হয়ে যান। দ্রুত ব্রেক কষেন চালক। তাতেও লাভ হয়নি।’ মাথার উপর দিয়ে চাকা চলে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর। তাঁর পিছনে থাকা মীনাক্ষীদেবী বাসের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন। তাঁর মাথার ডানদিকে গুরুতর চোট লাগে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসে পুলিস। তাঁদের উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। গুরুতর জখম মীনাক্ষীদেবীকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে পাঠানো হয়। বাসটিকে আটক করে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিস। চালককে গ্রেপ্তার করেছেন তদন্তকারীরা। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছন ঠাকুরপুকুর ট্রাফিক গার্ডের পদস্থ কর্তারা। সেখানে যান লালবাজারের ফেটাল স্কোয়াডের তদন্তকারী আধিকারিকরা। অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটল, খতিয়ে দেখেন তাঁরা। পুলিস সূত্রে খবর, বাসের বাঁদিকের প্রথম চাকায় পিষ্ট হন বৃদ্ধা। যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, চালকের ব্লাইন্ড স্পটে চলে যাওয়ার জেরেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
উল্লেখ্য, বছরখানেক আগে ঠিক একই জায়গায় বাসের ধাক্কায় জোকা ইএসআই হাসপাতালের এক মহিলা কর্মীর মৃত্যু হয়। নাইট ডিউটি সেরে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে। ফের একই ঘটনায় রাস্তায় পথচারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। সেই ঘটনার পরে এই ৩এ বাসস্ট্যান্ডে তিনটি বাসের সংঘর্ষ হয়। কিন্তু সেই ঘটনায় কারও মৃত্যু হয়নি। জখম হয়েছিলেন সাতজন।