কুঁড়েঘরে থেকেও অট্টালিকাবাসী জামাল সর্দারের পাশেই তার মা
বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ছেলে যখন রাজপ্রাসাদের মত বাড়িতে দিন যাপন করছে, তখন মায়ের ঠিকানা একটি কুঁড়েঘর। সোনারপুরের জমি লুটেরা হিসেবে পরিচিত জামালউদ্দিন ওরফে জামাল সর্দারকে নিয়ে এখন সব মহলেই জোর চর্চা চলছে। তার বিলাসবহুল বাড়ি দেখে সবাই ‘থ’। কিন্তু বাকি তিন ভাই ও মায়ের আর্থিক অবস্থা কোনওভাবেই, জামালের ‘বৈভব’এর সঙ্গে খাপ খাচ্ছে না। জামালের বাড়ির অদূরে একটি বাঁশ বাগানের মধ্যে জোড়াতাপ্পি মারা কুঁড়ে ঘরেই থাকেন শাহাজাদি সর্দার, জামালের মা। বিধবা ভাতার হাজার টাকাই তাঁর মাসিক সম্বল। জামালের মেজো দাদা তার বাড়ির একদম উল্টো দিকেই একটি ত্রিপল খাটানোর বাড়িতেই সংসার করছেন। কীর্তিমান এই মাতব্বর থেকে বাকিদের এত ফারাক কীভাবে, সেটাই এখন তদন্তকারীদের কাছে বড় প্রশ্ন। কার্যত ‘বেকার’ জামালের আয়ের উৎস, কাজকর্ম ইত্যাদি এখন আতস কাঁচের তলায়।
এত কিছুর মধ্যেই ছেলের পাশেই দাঁড়িয়েছেন বৃদ্ধা শাহাজাদি। মেজো ছেলের ঘরের উঠোনে বসে জামালের বাড়ির দিকে ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাকিয়ে তিনি বলেন, যে দু’বেলা ভালোমতো খাওয়া-দাওয়া করে, তার শত্রু অনেক। জামাল কোনও বেআইনি কাজ করেনি। ওর বাবার মৃত্যুর পর অনেক জমি জমা বিক্রি করে, এখানে এই বাড়ি করেছে। কিন্তু বাবা’র জমি বিক্রির টাকা বাকি ছেলেরা পেয়েছিলেন কি না, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি বৃদ্ধার থেকে। তাঁর কথায়, জামাল লোকের বিপদে-আপদে সবসময় ঝাঁপিয়ে পড়ত। আমায় অনেকবার ওর বাড়িতে থাকার জন্য অনুরোধ করলেও, আমি রাজি হইনি। ছেলের গুনগান গাইলেও, তার ‘বিচারালয়ে’ যে সালিশি সভা হতো, সেটা স্বীকার করেছেন তিনি। ওই বৃদ্ধা বলেন, লোকে যেত ওর কাছে সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কখনও মহিলাদের বেঁধে মারধর করেনি। এদিকে, জামালের মেজদাও এইসব বিতর্কে থাকতে চায় না। তাঁর স্পষ্ট কথা, ভাইয়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আমি মাঠে-ঘাটে কাজ করে রোজগার করি। ও কী করল, না করল, আমার তাতে কিছু যায় আসে না!