প্রতারণার ৭ লক্ষ টাকায় ১০টি আইফোন, রাঁচি থেকে ধৃত দুই
বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: প্রতারণার টাকা হাতিয়ে অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর নয়। সেই সাত লক্ষ টাকায় একটি বিপণন সংস্থার অনলাইন সাইটে ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারকরা বরাত দিয়েছিল ১০টি আইফোন! তার মধ্যে দু’টি ডেলিভারি হয়ে গেলেও বাকি আটটি হয়নি। তারই সূত্রে ধরে অভিনব প্রতারণা চক্রের কিনারা করল লেকটাউন থানার পুলিস। তদন্তে নেমে ঝাড়খণ্ডের রাঁচি থেকে এই চক্রের দু’জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডেলিভারি না হওয়া আটটি ফোনের বরাত দ্রুত বন্ধ করে উদ্ধার করা হয়েছে ছ’লক্ষ টাকা। এমনকী, ডেলিভারি করা দু’টি ফোনের মধ্যে একটি উদ্ধারও করা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধার হওয়া টাকা বৃহস্পতিবার প্রতারিত মহিলার হাতে তুলে দিয়েছে লেকটাউন থানা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রবীণ মহিলার বাড়ি লেকটাউন থানা এলাকায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। প্রতারক নিজেকে ব্যাঙ্কের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেয়। ওই মহিলা তা সত্যি ভেবে নেন। গল্পের ছলে প্রতারক ব্যাঙ্কের নানা তথ্য হাতিয়ে নেয়। তাঁর অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তারপরই ওই মহিলা দেখেন, অ্যাকাউন্ট থেকে ৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ডেবিট হয়ে গিয়েছে। তখন তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি লেকটাউন থানায় যান। সেখানে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করে।
তদন্ত গিয়ে পুলিস আধিকারিকরা দেখেন, প্রতারকরা ৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা তুলে নিলেও সেই টাকা কোনও অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেনি। কোনও ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্টেও স্থানান্তর করেনি। বেশকিছু তথ্য হাতে আসার পর পুলিস জানতে পারে, প্রতারকরা একটি বিপণন সংস্থার অনলাইন সাইটে ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট খোলে। সেখানে ৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা রেখে দেয়। প্রথমে প্রতারকরা লক্ষাধিক টাকায় দু’টি আইফোন বরাত দেয়। তারপর একইভাবে বরাত দেয় আরও আটটি আইফোন। প্রথম দু’টি আইফোন ডেলিভারির ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাঁচিতে তা পৌঁছে যায়। কিন্তু, বাকি আইফোনগুলি ডেলিভারির আগেই লেকটাউন থানার পুলিস সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপর বরাত বন্ধ করে বাকি ৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
দু’টি আইফোন ডেলিভারির সূত্রে ধরে লেকটাউন থানার পুলিস রাঁচি থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে একটি আইফোন উদ্ধার করা হয়। ধৃতরা পুলিসকে জানিয়েছে, প্রতারণার টাকা দিয়ে আইফোন সহ নানা সামগ্রী কিনে বিক্রি করত তারা। ধরা পড়ার ভয়ে প্রতারণার টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করত না।